ফ্রান্সে বর্তমানে অন্তত ৩ হাজার ২৭৩ জন বিদেশি অভিভাবকবিহীন কিশোর তাদের অপ্রাপ্তবয়স্ক স্বীকৃতি আদায় করতে আদালতে আপিল করেছে। বৃহস্পতিবার প্রকাশিত এক সমীক্ষায় এই তথ্য উঠে এসেছে। এর মধ্যে অন্তত এক হাজার জন এখনও রাস্তায় বসবাস করছে।
সমীক্ষা অনুযায়ী, মোট ২ হাজার ৯১৮ জন কিশোর (৮৯.১৫%) এবং ৩৫৫ জন কিশোরী (১০.৮৫%) আদালতের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় আছে। গত বছরের তুলনায় কিশোরীর সংখ্যা বেড়েছে দ্বিগুণের বেশি, যা সংগঠনটির মতে ‘‘অত্যন্ত উদ্বেগজনক’’। কারণ, মেয়েরা আরও বেশি ঝুঁকির মধ্যে থাকে।
এই গবেষণাটি পরিচালনা করেছে ‘‘কো-অর্ডিনেশন ন্যাশনাল জোন এক্সিলে অঁ দনজের’’ (CNJIEI) নামের সংগঠন, যেখানে শতাধিক এনজিও একসঙ্গে কাজ করছে। চলতি বছরের জুনে ফ্রান্সের ৭৯টি ডিপার্টমেন্টে স্থানীয় সংগঠনগুলোকে প্রশ্নপত্র ও টেলিফোন সাক্ষাৎকারের মাধ্যমে তথ্য সংগ্রহ করা হয়।
২০২৪ সালের তুলনায় কিশোরদের সংখ্যা কিছুটা কমেছে। তখন ছিল ৩ হাজার ২৬৯ জন, বর্তমানে নেমে এসেছে ২ হাজার ৯১৮ জনে। তবে কিশোরীর সংখ্যা ২০৮ থেকে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩৫৫ জনে।
সমীক্ষা বলছে, গড়ে ৬০% আপিলকারী তরুণদের অপ্রাপ্তবয়স্ক হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে আদালত। যদিও অঞ্চলভেদে এ হার ভিন্ন—কোথাও মাত্র ৩%, আবার কোথাও শতভাগ।
এর আগে ২০২৪ সালের সমীক্ষার পর থেকে ফ্রান্স দ্বিতীয়বারের মতো জাতিসংঘের শিশু অধিকার কমিটির কাছে দোষী সাব্যস্ত হয়েছে। কারণ, এক কিশোরকে দীর্ঘদিন সিদ্ধান্তহীন অবস্থায় রেখে কোনো সুরক্ষা ব্যবস্থা দেওয়া হয়নি।
এদিকে ফ্রান্সের মানবাধিকার কমিশন (CNCDH), সংসদীয় তদন্ত কমিশন এবং শিশু অধিকার বিষয়ক মিশন সরকারের ভূমিকার সমালোচনা করেছে। তাদের মতে, বয়স স্বীকৃতির আপিল চলাকালে সব কিশোর-কিশোরীকে শিশু সুরক্ষা ব্যবস্থার আওতায় রাখা জরুরি।
সিএনজেইডি জানিয়েছে, ৩ হাজার ২৭৩ জনের এ সংখ্যা ‘‘বাস্তবতার চেয়ে কম’’ হতে পারে। সংগঠনটির দাবি, সরকারকে অবিলম্বে পদক্ষেপ নিতে হবে, এবং আপিল করার সঙ্গে সঙ্গে এসব তরুণকে শিশু সুরক্ষা ব্যবস্থার আওতায় আনতে হবে।