ফ্রান্সে অনিয়মিত অভিবাসীদের বৈধতার শর্ত কঠোর করতে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর নতুন সার্কুলার

France Irregular immigrants

ফ্রান্সের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ব্রুনো রোতাইয়ো সম্প্রতি একটি নতুন সার্কুলার ঘোষণা করেছেন, যা অনিয়মিত অভিবাসীদের বৈধ হওয়ার প্রক্রিয়াকে আগের চেয়ে কঠোর করে তুলেছে। শুক্রবার বৃহত্তর প্যারিসের ভের্সাই প্রেফেকচুরে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এই নতুন নির্দেশনার বিভিন্ন দিক তুলে ধরা হয়।

  1. প্রেফেকচুরের ভূমিকা
    নতুন সার্কুলার অনুযায়ী, বৈধতা পাওয়ার সিদ্ধান্ত প্রেফেকচুরগুলোর প্রধানদের বিবেচনার ভিত্তিতে হবে। বৈধতা স্বয়ংক্রিয় অধিকার হিসেবে বিবেচিত হবে না এবং এটি আগের মতোই ‘ব্যতিক্রমী’ রয়ে গেছে।
  2. পরিসংখ্যান ও বাস্তবতা
    ২০২৩ সালে ফ্রান্সে থাকা ৪,৫০,০০০ অনথিভুক্ত অভিবাসীর মধ্যে মাত্র ৮ ভাগ (প্রায় ৩৩৪,৭৩৪ জন) নিয়মিত হতে পেরেছেন। নতুন সার্কুলারের কঠোর শর্তে এই সংখ্যা আরও কমে যেতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
  3. সার্কুলারের সীমাবদ্ধতা
    আইনজীবী স্তেফান মজন্দের মতে, নতুন সার্কুলারটি প্রেফেকচুরগুলোর জন্য কেবল একটি নির্দেশনা। তারা চাইলে এটি প্রয়োগ করতে পারে বা উপেক্ষা করতে পারে। ফলে বৈধতা প্রক্রিয়ায় আরও অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে।
  4. নথির পরিবর্তন
    নতুন সার্কুলারটি তিন পৃষ্ঠার, যেখানে আগের সার্কুলার ভালস ছিল ১২ পৃষ্ঠার। এটি ২০১২ সালের রোডম্যাপের পরিবর্তে নির্দিষ্ট কিছু মানদণ্ড উল্লেখ করেছে, যা ২০২৪ সালের নতুন অভিবাসন আইনের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ।
  5. নতুন উদ্দেশ্য
    ২০১২ সালের সার্কুলার ভালসের মূল লক্ষ্য ছিল অভিবাসন নীতিকে সুষম ও স্পষ্ট করা। কিন্তু নতুন সার্কুলারে ‘অনিয়মিত অভিবাসন মোকাবেলা এবং অভিবাসন প্রবাহ নিয়ন্ত্রণ’কেই প্রধান উদ্দেশ্য হিসেবে তুলে ধরা হয়েছে।

অভিবাসন বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, নতুন সার্কুলারটি অনিয়মিত অভিবাসীদের জন্য বৈধতা প্রক্রিয়াকে আরও কঠিন করে তুলেছে।

অভিবাসন সংস্থা লা সিমাদের কর্মকর্তা অরোর ক্রিজুয়া বলেছেন, “নতুন সার্কুলারে কোন মানদণ্ডগুলো বৈধতা পাওয়ার জন্য গুরুত্বপূর্ণ হবে, তা স্পষ্ট নয়।”

ফ্রান্সে বসবাসরত বাংলাদেশি অনিয়মিত অভিবাসীদের জন্য এই সার্কুলার আরও কঠিন চ্যালেঞ্জ তৈরি করেছে। নতুন শর্তগুলো তাদের বৈধতা পাওয়ার প্রক্রিয়া জটিল করে তুলেছে।

নতুন সার্কুলারটি ফ্রান্সে অভিবাসনের জটিলতা বাড়িয়ে দিয়েছে। এটি অভিবাসীদের বৈধতার প্রক্রিয়াকে আরও কঠোর শর্তের মধ্যে ফেলেছে। এই পরিস্থিতিতে অভিবাসীদের জন্য সঠিক তথ্য সংগ্রহ ও বিশেষজ্ঞ পরামর্শ গ্রহণ জরুরি।