চলতি ২০২৫ সালের শুরু থেকেই দেশের স্বর্ণের বাজারে চলছে নজিরবিহীন অস্থিরতা। বাংলাদেশ জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশন (বাজুস) সূত্রে জানা গেছে, বছরের প্রথম সাত মাসেই স্বর্ণের দাম সমন্বয় হয়েছে ৪৫ বার। এর মধ্যে ২৯ বার বেড়েছে দাম, আর মাত্র ১৬ বার কমেছে।
বিশ্ববাজারে স্বর্ণের দাম প্রতিনিয়ত ওঠানামা করায় দেশের বাজারেও এই অস্থিরতা দেখা দিয়েছে। বর্তমানে প্রতি আউন্স স্বর্ণের দাম ৩,২৮০ থেকে ৩,৩৫০ ডলারের মধ্যে ঘোরাফেরা করছে, যদিও গত এপ্রিলেই এটি রেকর্ড ৩,৫০০ ডলারে পৌঁছায়। বিনিয়োগ ব্যাংক গোল্ডম্যান স্যাকসের পূর্বাভাস অনুযায়ী, বছরের শেষ নাগাদ এই দাম ৩,৭০০ ডলার ছাড়িয়ে যেতে পারে।
বাজার পর্যবেক্ষণে দেখা গেছে, ১৫ জানুয়ারি প্রথম দফায় ভরিতে ১,১৫৫ টাকা বাড়িয়ে স্বর্ণের দাম দাঁড়ায় ১,৩৯,৪৪৩ টাকায়। এরপর টানা মূল্যবৃদ্ধির ধারা চলতে থাকে ফেব্রুয়ারিতে, যা culminate করে ২০ ফেব্রুয়ারি সর্বোচ্চ ১,৫৪,৫২৫ টাকায়। এপ্রিলের ২২ তারিখে স্বর্ণের দাম গিয়ে ঠেকে ১,৭৭,৮৮৮ টাকায়—দেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ। তবে পরদিনই দাম কমে যায় ৫,৩৪২ টাকা।
মে মাসে দাম সমন্বয় হয় ১০ বার, সমানসংখ্যক বার বাড়ানো ও কমানো হয়। জুনে ৪ বার, আর জুলাইয়ে এ পর্যন্ত ৫ বার দামের হেরফের হয়েছে। সর্বশেষ ২৪ জুলাই স্বর্ণের দাম কমিয়ে ১ লাখ ৭১ হাজার ৬০১ টাকা নির্ধারণ করে বাজুস।
বাজুসের প্রাইস মনিটরিং কমিটির চেয়ারম্যান মাসুদুর রহমান বলেন, “বিশ্ববাজারে প্রতি ঘণ্টায় স্বর্ণের দামের পরিবর্তন হয়। সে কারণে স্থানীয় বাজারেও দ্রুত সমন্বয়ের প্রয়োজন হয়।”
বিশ্লেষকদের মতে, স্বর্ণ বরাবরই ‘নিরাপদ বিনিয়োগ’ হিসেবে বিবেচিত হলেও এখন এটি স্মার্ট ইনভেস্টমেন্টও। তবে বিশ্বরাজনীতির স্থিতিশীলতা ফিরে এলে কিংবা সুদহার হঠাৎ বাড়লে দাম কমে যেতে পারে বলেও তারা সতর্ক করেছেন।
জেপি মরগান পূর্বাভাস দিয়েছে, ২০২৬ সালের দ্বিতীয় প্রান্তিকের মধ্যে স্বর্ণের দাম প্রতি আউন্স ৪ হাজার ডলার ছাড়াতে পারে। আর বিলিয়নিয়ার বিনিয়োগকারী জন পলসনের মতে, ২০২৮ সালের মধ্যে এই দাম পৌঁছাতে পারে ৫ হাজার ডলারে।