ডেনমার্কের অংশ হিসেবে থাকা গ্রিনল্যান্ড নিয়ে সাম্প্রতিক সময়ে নতুন করে বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মন্তব্যে এই বিতর্ক তীব্র আকার ধারণ করে। ট্রাম্প বলেন, “ভূরাজনৈতিক নিরাপত্তার কারণে গ্রিনল্যান্ড যুক্তরাষ্ট্রের অংশ হওয়া উচিত।” তবে এই বক্তব্যের সঙ্গে গ্রিনল্যান্ডের জনগণের মতামত সম্পূর্ণ বিপরীত বলে প্রমাণিত হয়েছে।
জরিপে জনগণের মতামত
পোলস্টার ভেরিয়ান নামের একটি জরিপকারী সংস্থা ডেনমার্কের একটি সংবাদপত্রের অনুরোধে গ্রিনল্যান্ডে জনমত জরিপ চালায়। এই জরিপে গ্রিনল্যান্ডের বাসিন্দাদের প্রশ্ন করা হয়, তাঁরা যুক্তরাষ্ট্রের অংশ হতে চান কি না।
জরিপে দেখা যায়:
- ৮৫ শতাংশ অধিবাসী বলেছেন, তাঁরা যুক্তরাষ্ট্রের অংশ হতে চান না।
- ৬ শতাংশ বলেছেন, তাঁরা যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে যুক্ত হতে চান।
- ৯ শতাংশ এই বিষয়ে সিদ্ধান্তহীন।
ট্রাম্পের মন্তব্যের পর গ্রিনল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী স্পষ্ট করে বলেছেন, “গ্রিনল্যান্ড বিক্রির জন্য নয়। গ্রিনল্যান্ডের মানুষই ঠিক করবেন, তাঁরা কী চান।”
ডেনমার্ক সরকারও ট্রাম্পের মন্তব্যের তীব্র বিরোধিতা করেছে। পাশাপাশি, তারা গ্রিনল্যান্ডে সামরিক ঘাঁটি তৈরির পরিকল্পনা ঘোষণা করেছে। ডেনমার্কের দাবি, এটি গ্রিনল্যান্ডের সুরক্ষার জন্য প্রয়োজন।
গ্রিনল্যান্ড বর্তমানে ডেনমার্কের অংশ হলেও ২০০৯ সালে স্বায়ত্তশাসনের পূর্ণ ক্ষমতা দেওয়া হয়। তারা চাইলে গণভোটের মাধ্যমে স্বাধীনতা লাভ করতে পারে। তবে গত ১৬ বছরে গ্রিনল্যান্ড এই পথে এগোয়নি। ডেনমার্কের ছত্রচ্ছায়ায় থেকেও তারা কার্যত স্বাধীনভাবে সরকার পরিচালনা করছে।
ট্রাম্প দাবি করেছিলেন, গ্রিনল্যান্ডের ৫৭ হাজার বাসিন্দা যুক্তরাষ্ট্রের অংশ হতে চান। কিন্তু জনমত জরিপে সেই দাবি ভুল প্রমাণিত হয়েছে। ৮৫ শতাংশ মানুষ স্পষ্টভাবে বলেছেন, তাঁরা ডেনমার্কের অংশ হয়েই থাকতে চান।
উল্লেখ্য, আগে থেকেই গ্রিনল্যান্ডে যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক ঘাঁটি রয়েছে। তবে ট্রাম্পের বক্তব্য এবং ডেনমার্কের নতুন সামরিক পরিকল্পনা এই অঞ্চলে নতুন ভূরাজনৈতিক উত্তেজনার ইঙ্গিত দিচ্ছে।