আমেরিকার H-1B ভিসা নিয়ে উৎকণ্ঠায় ভারতীয়রা

America's H-1B visa

আমেরিকায় কাজ করার বা পড়াশোনা করার স্বপ্ন বহু ভারতীয়র। এই স্বপ্ন বাস্তবায়নে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ হলো ভিসা, বিশেষ করে H-1B ভিসা, যা দক্ষ বিদেশি কর্মীদের আমেরিকায় কাজ করার সুযোগ দেয়। তবে সাম্প্রতিক সময়ে মার্কিন ভিসানীতিতে পরিবর্তনের ফলে ভারতীয়দের মধ্যে ভিসা নিয়ে উৎকণ্ঠা বেড়েছে।

H-1B ভিসা প্রোগ্রামের অধীনে প্রতি বছর হাজার হাজার দক্ষ পেশাজীবী আমেরিকায় কাজ করার সুযোগ পান। প্রযুক্তি খাতে এই ভিসাধারীদের চাহিদা সবচেয়ে বেশি। ২০২৩ সালের তথ্য অনুযায়ী, এই ভিসা প্রাপ্তদের ৭২ শতাংশই ভারতীয়, এবং এদের মধ্যে অধিকাংশই বিজ্ঞান, প্রযুক্তি, প্রকৌশল ও গণিত (STEM) খাতে কাজ করেন।

তবে এই প্রোগ্রামকে ঘিরে বিতর্কও কম নয়। সমালোচকদের মতে, H-1B ভিসা বিদেশি কর্মীদের মাধ্যমে আমেরিকান কর্মীদের জন্য প্রতিযোগিতা বাড়িয়ে দেয়। ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসন এই ভিসা সীমিত করার জন্য বেশ কিছু পদক্ষেপ নেয়, যা ভারতীয়দের মধ্যে উদ্বেগ সৃষ্টি করে।

ভারতীয়রা শুধু কাজের জন্যই নয়, পড়াশোনার জন্যও আমেরিকায় ভিসার ওপর নির্ভরশীল। ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষে আমেরিকায় তিন লাখেরও বেশি ভারতীয় শিক্ষার্থী পড়াশোনা করেছেন, যা চীনকেও ছাড়িয়ে গেছে। এদের অনেকেই পড়াশোনার খরচ চালানোর জন্য শিক্ষাঋণের ওপর নির্ভরশীল।

যদি ভিসানীতিতে হঠাৎ কোনো পরিবর্তন আসে, তবে এই শিক্ষার্থীদের পরিবার বড় আর্থিক ঝুঁকিতে পড়তে পারে। বিশেষ করে H-1B ভিসার সীমাবদ্ধতা তাদের জন্য একটি বড় সংকট হয়ে দাঁড়িয়েছে।

ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রথম মেয়াদে H1B ভিসা কর্মসূচি সীমিত করার প্রচেষ্টা দেখা গিয়েছিল। যদিও পরে প্রযুক্তি খাতের চাহিদা মেটাতে এটি আবারও চালু করা হয়। বিশেষ করে ইলন মাস্কের মতো উদ্যোক্তারা এই ভিসার সমর্থক। তাদের মতে, প্রতিভাবান কর্মী আকর্ষণে এই প্রোগ্রাম অপরিহার্য।

তবে ট্রাম্প প্রশাসনের দ্বিতীয় মেয়াদে ভিসানীতিতে কোনো পরিবর্তন আসবে কি না, তা নিয়ে অনিশ্চয়তা রয়ে গেছে। প্রশাসনের মধ্যেই এই নিয়ে মতবিরোধ আছে। অনেকেই মনে করেন, উচ্চ বেতনের চাকরির সুযোগ এবং স্থায়ী বসবাসের সুযোগ ভিসা প্রোগ্রামকে আকর্ষণীয় করে তুললেও এটি সঠিকভাবে পরিচালিত না হলে অপব্যবহারের ঝুঁকি তৈরি হয়।