হামজা চৌধুরীর অভিষেক ম্যাচটিকে জয় দিয়ে রাঙানোর প্রত্যাশা ছিল বাংলাদেশ দলের। সেই সঙ্গে ভারতের বিপক্ষে দীর্ঘ ২২ বছরের জয়খরা কাটানোর স্বপ্নও দেখছিল তারা। জওহরলাল নেহরু স্টেডিয়ামে সব সুযোগ পেয়েও ব্যর্থতার হতাশায় মাঠ ছাড়তে হলো মুজিবুর রহমান জনি-মোহাম্মদ হৃদয়দের।
প্রথম থেকেই আক্রমণাত্মক ফুটবল খেলেছে বাংলাদেশ। কিন্তু গোলের সহজ সুযোগ একের পর এক মিস করেছেন ফরোয়ার্ডরা। ফলাফল, গোলশূন্য ড্র নিয়ে মাঠ ছাড়তে হলো দলকে। সর্বশেষ ২০২১ সালেও ভারতের বিপক্ষে ১-১ গোলে ড্র করেছিল বাংলাদেশ। ২০০৩ সালে সাফ চ্যাম্পিয়নশিপে জয় পাওয়া বাংলাদেশ ২২ বছর পরও সেই স্মৃতি ফিরিয়ে আনতে পারল না।
গোলের সুযোগ এসেছিল, কিন্তু কাজে লাগেনি
ম্যাচের একদম শেষ মুহূর্তেও জয়সূচক গোলের সুযোগ এসেছিল বাংলাদেশের কাছে। ৮৯ মিনিটে বাঁ প্রান্ত থেকে ফয়সাল ফাহিমের নিচু শট রুখে দেন ভারতীয় গোলরক্ষক বিশাল কাইথ। যোগ করা সময়ে রাকিব হোসেনও একটি সুযোগ পেয়েছিলেন, তবে তিনিও গোলের দেখা পাননি।
বাংলাদেশের আক্রমণভাগের ব্যর্থতার চিত্র ফুটে উঠেছে পুরো ম্যাচ জুড়েই। প্রথম মিনিটেই গোলের সুবর্ণ সুযোগ পেয়েছিলেন মুজিবুর রহমান জনি। ভারতের গোলরক্ষক বিশাল কাইথ ভুল করে জনিকে বল দেন, কিন্তু ফাঁকা পোস্ট পেয়েও বাইরে শট নেন তিনি।
এরপর ৯ মিনিটে শাহরিয়ার ইমন ফ্রি হেডের সুযোগ পেয়েও বাইরে মারেন। ১২ মিনিটে হৃদয়ের নেওয়া শট গোললাইন থেকে প্রতিহত করেন ভারতীয় ডিফেন্ডার শুভাশীষ রায়। ১৮ মিনিটে আবারও হেডের সুযোগ মিস করেন ইমন।
ভারতেরও সুযোগ এসেছিল, কিন্তু বাংলাদেশের রক্ষণ দেয়াল
ভারত প্রথম ভালো সুযোগ পায় ৩০ মিনিটে। বাঁ প্রান্ত থেকে লিস্টন কোলাসোর এরিয়াল বলে উদান্তা সিং হেড নেন, কিন্তু বাংলাদেশের এক ডিফেন্ডার প্রতিহত করেন। ফিরতি বলে ফারুক চৌধুরী শট নিলেও তা তালুবন্দি করেন গোলরক্ষক মিতুল মারমা।
বিরতিতে যাওয়ার ৪ মিনিট আগে জনির আরও একটি সুযোগ এসেছিল। সতীর্থের সঙ্গে দেওয়া-নেওয়া করে ডান প্রান্ত থেকে ভারতের বক্সে ঢুকেছিলেন তিনি। কিন্তু শেষ মুহূর্তে বলের নিয়ন্ত্রণ রাখতে না পারায় গোলরক্ষক বিশাল কাইথ তা আটকে দেন।
হতাশা ও আত্মবিশ্বাসের মিশেল
বাংলাদেশের কোচ হাভিয়ের কাবরেরা ম্যাচ শেষে বলেন, “আমরা ম্যাচটা জিততে পারতাম। অনেক সুযোগ তৈরি করেছি, কিন্তু শেষ পর্যন্ত তা কাজে লাগাতে পারিনি। তবু দলের পারফরম্যান্স আশাব্যঞ্জক।”
অন্যদিকে, অভিষেক ম্যাচে ভালো পারফর্ম করা হামজা চৌধুরী বলেন, “আমাদের জয় পাওয়া উচিত ছিল। আমরা ভালো খেলেছি, কিন্তু গোল মিসের খেসারত দিতে হয়েছে। তবে এই পারফরম্যান্স আমাদের সামনে এগিয়ে যেতে আত্মবিশ্বাস দেবে।”
আগামী ১০ জুন ঢাকায় সিঙ্গাপুরের বিপক্ষে ম্যাচ বাংলাদেশের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এশিয়ান কাপে জায়গা পাওয়ার স্বপ্ন বাঁচিয়ে রাখতে হলে সেই ম্যাচে জয় দরকার। ভারতের বিপক্ষে এই ড্র দলকে কিছুটা হতাশ করলেও, সামনের পথচলায় তারা আত্মবিশ্বাস ধরে রাখতে চায়।