কাশ্মীরের পেহেলগামে হামলা: পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ভারতের পাঁচ কড়া পদক্ষেপ

Pahalgam attack

কাশ্মীরের পেহেলগামে বন্দুকধারীদের হামলায় ২৬ জন পর্যটক নিহত হওয়ার পর পাকিস্তানের বিরুদ্ধে পাঁচটি বড় পদক্ষেপের ঘোষণা দিয়েছে ভারত। আজ বুধবার ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বে অনুষ্ঠিত কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার নিরাপত্তাবিষয়ক কমিটির এক জরুরি বৈঠকে এই সিদ্ধান্তগুলো গৃহীত হয়। পরে ভারতের পররাষ্ট্রসচিব বিক্রম মিশ্রি সাংবাদিকদের সামনে এসব ঘোষণা দেন।

প্রথম পদক্ষেপ হিসেবে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে ১৯৬০ সালের ঐতিহাসিক সিন্ধু পানি চুক্তি অনির্দিষ্টকালের জন্য স্থগিত করা হয়েছে। ফলে পাকিস্তান আপাতত চুক্তি অনুযায়ী নদীগুলোর (সিন্ধু, চন্দ্রভাগা, শতদ্রু, ঝিলাম, ইরাবতী ও বিপাশা) পানি পাবে না। চুক্তিটি তৎকালীন ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহরু ও পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট আইয়ুব খানের মধ্যে বিশ্বব্যাংকের মধ্যস্থতায় স্বাক্ষরিত হয়েছিল।

দ্বিতীয় সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আটারি-ওয়াঘা সীমান্ত বন্ধ করে দিচ্ছে ভারত। আজ থেকেই কার্যকর হওয়া এ সিদ্ধান্তে সীমান্ত দিয়ে ভারতে প্রবেশ করা সব পাকিস্তানিকে আগামী ১ মে’র মধ্যে নিজ দেশে ফিরে যেতে বলা হয়েছে।

তৃতীয় পদক্ষেপ হিসেবে, নয়াদিল্লিতে নিযুক্ত পাকিস্তানি হাইকমিশনের সব সামরিক উপদেষ্টাকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করে বহিষ্কার করা হয়েছে। একইসঙ্গে ইসলামাবাদে নিযুক্ত ভারতীয় সামরিক কর্মকর্তাদের ফিরিয়ে আনা হচ্ছে।

চতুর্থ পদক্ষেপে বলা হয়েছে, দুই দেশের হাইকমিশনে কর্মরত কর্মকর্তার সংখ্যা ৫৫ থেকে কমিয়ে ৩০-এ নামিয়ে আনা হবে। এতে কূটনৈতিক সম্পর্কের মাত্রা অনেকটাই সংকুচিত হবে বলে মনে করা হচ্ছে।

পঞ্চম ও সবচেয়ে কড়া পদক্ষেপ হিসেবে, ভারতে পাকিস্তানি নাগরিকদের প্রবেশ সাময়িকভাবে নিষিদ্ধ করা হয়েছে। সেইসঙ্গে সব সার্ক ভিসা বাতিল করা হয়েছে এবং যাঁরা ইতিমধ্যে ভারতে অবস্থান করছেন, তাঁদের ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে দেশ ছাড়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

সরকারি ভাষ্যে জানানো হয়, মঙ্গলবার বিকেলে পেহেলগাম শহরের কাছাকাছি বৈসরণ উপত্যকায় ঘটে যাওয়া হামলার জন্য পুরোপুরি পাকিস্তানকেই দায়ী করছে ভারত। সরকার এটিকে ২০১৯ সালের পুলওয়ামা হামলার পর সবচেয়ে প্রাণঘাতী সন্ত্রাসী হামলা হিসেবে আখ্যা দিয়েছে।

ভারত সরকার জানিয়েছে, হামলাকারীদের বিচার নিশ্চিত করতে তারা সব ধরনের সম্ভাব্য পদক্ষেপ গ্রহণ করবে।