আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে ভারতের পক্ষ থেকে দেওয়া ‘নসিহত’কে অযাচিত ও অগ্রহণযোগ্য বলে মন্তব্য করেছেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন। তিনি স্পষ্টভাবে জানিয়েছেন, বাংলাদেশ একটি সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে এবং এ বিষয়ে প্রতিবেশী কোনো দেশের উপদেশ গ্রহণের প্রয়োজন নেই।
বুধবার বিকেলে সচিবালয়ে নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এসব কথা বলেন তিনি।
পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, “বাংলাদেশে নির্বাচন কেমন হবে, তা নিয়ে আমরা প্রতিবেশীদের কোনো উপদেশ চাই না। এই সরকার অত্যন্ত ভালো পরিবেশে একটি নির্বাচন আয়োজন করতে চায়—যা গত ১৫ বছরে ছিল না। এখন যখন আমরা একটি ভালো নির্বাচনের দিকে যাচ্ছি, তখন ভারত নসিহত করছে—এটি অগ্রহণযোগ্য।”
তিনি আরও বলেন, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আদালতের মাধ্যমে দণ্ডপ্রাপ্ত হয়ে পাশের দেশে অবস্থান করেও অস্থিরতা সৃষ্টির চেষ্টা করছেন। আগে তিনি ভারতে বসে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বক্তব্য দিতেন, এখন সংবাদমাধ্যমেও বক্তব্য দিচ্ছেন। তার এসব বক্তব্যে উসকানিমূলক বিষয় রয়েছে বলে মন্তব্য করেন তৌহিদ হোসেন।
পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, “একজন দণ্ডপ্রাপ্ত ব্যক্তি পাশের দেশে বসে বাংলাদেশে অস্থিতিশীলতা সৃষ্টি করার চেষ্টা করলে আমরা অবশ্যই আপত্তি জানাব। আমরা তাকে ফেরত চাইবই। কিন্তু ভারত শেখ হাসিনাকে ফেরত পাঠাচ্ছে না, তার বক্তব্যও বন্ধ করছে না। উল্টো তারা আমাদের নির্বাচন নিয়ে নসিহত করছে।”
তিনি অভিযোগ করেন, অতীতে যেসব নির্বাচন প্রহসনের মাধ্যমে অনুষ্ঠিত হয়েছে, সে সময় ভারত কোনো প্রতিক্রিয়া জানায়নি। অথচ এখন একটি সুষ্ঠু নির্বাচন আয়োজনের উদ্যোগ নেওয়া হলে তারা উপদেশ দিচ্ছে, যা গ্রহণযোগ্য নয়।
এ সময় ভারতের ‘সেভেন সিস্টারস’ অঞ্চল নিয়ে হাসনাত আব্দুল্লাহর মন্তব্যের বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তৌহিদ হোসেন বলেন, বাংলাদেশ কোনো ধরনের সন্ত্রাসবাদ বা বিচ্ছিন্নতাবাদে বিশ্বাস করে না। তিনি বলেন, “কোনো রাজনৈতিক নেতা ব্যক্তিগতভাবে কিছু বলতে পারেন, কিন্তু বাংলাদেশের কোনো সরকারই বিচ্ছিন্নতাবাদকে সমর্থন করে না বা কাউকে আমাদের ভূখণ্ডে আশ্রয় দেবে না।”
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির মুক্তিযুদ্ধ সংক্রান্ত মন্তব্য প্রসঙ্গে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ভারত বরাবরই মুক্তিযুদ্ধে বাংলাদেশের ভূমিকাকে খাটো করে দেখানোর চেষ্টা করে আসছে, যা বাংলাদেশের জন্য মোটেও গ্রহণযোগ্য নয়।
