বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক রূপান্তরের অংশ হিসেবে অন্তর্বর্তী সরকার একটি সুষ্ঠু, অবাধ ও গ্রহণযোগ্য জাতীয় নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছে বলে জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। আজ বৃহস্পতিবার জাপানের টোকিও শহরের ইম্পেরিয়াল হোটেলে আয়োজিত ৩০তম নিক্কেই ফোরামের ‘ফিউচার অব এশিয়া’ উদ্বোধনী অধিবেশনে বক্তব্যকালে এ কথা বলেন তিনি।
বক্তব্যে অধ্যাপক ইউনূস বলেন, “আমরা দেশের জনগণের ন্যায়বিচার, সমতা, স্বাধীনতা ও মর্যাদা নিশ্চিত করতে এবং তাদের স্বপ্ন ও আকাঙ্ক্ষা পূরণে কাজ করে যাচ্ছি।”
পরে ফোরামের প্রশ্নোত্তর পর্বে অংশ নেন প্রধান উপদেষ্টা। সেখানে তিনি বলেন, অন্তর্বর্তী সরকার তিনটি মূল লক্ষ্য সামনে রেখে কাজ করছে—প্রথমত, রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক সংস্কার, দ্বিতীয়ত, গত বছরের জুলাই মাসে সংঘটিত গণ–অভ্যুত্থানে অপরাধীদের বিচার, এবং তৃতীয়ত, একটি গ্রহণযোগ্য জাতীয় নির্বাচন আয়োজন।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, “নির্বাচন এই বছরের ডিসেম্বর অথবা সর্বোচ্চ আগামী বছরের জুনে অনুষ্ঠিত হবে।” তবে নির্বাচন কখন হবে তা নির্ভর করছে সংস্কারের অগ্রগতির ওপর। তিনি বলেন, “যদি দেশকে আগের অবস্থায় রেখে নির্বাচন করতে চাই, তাহলে ডিসেম্বরেই সম্ভব। কিন্তু যদি আমরা প্রকৃত ও কার্যকর সংস্কার চাই, তাহলে আমাদের আরও ছয় মাস সময় নিতে হবে।”
তিনি জানান, কিছু রাজনৈতিক দল নির্বাচন তড়িঘড়ি করে ডিসেম্বরে আয়োজনের পক্ষে মত দিলেও, সব রাজনৈতিক দল সে অবস্থানে নেই। “শুধু একটি দল ডিসেম্বরেই নির্বাচন দাবি করছে,” বলেন ইউনূস।
প্রধান উপদেষ্টা স্পষ্টভাবে বলেন, তাঁর কোনো রাজনৈতিক অভিলাষ নেই এবং নির্বাচনের মাধ্যমে একটি নির্বাচিত সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করবেন। “আমরা একটি দায়িত্ব নিয়েছি, সেটি শেষ করেই সরে দাঁড়াব,” বলেন তিনি।
নিক্কেই ফোরামে (Nikkei Forum) বক্তৃতায় বাংলাদেশের শাসনব্যবস্থার সাম্প্রতিক পরিবর্তনের প্রসঙ্গ তুলে ধরে অধ্যাপক ইউনূস বলেন, “গত বছর শিক্ষার্থীদের নেতৃত্বে যে গণ–অভ্যুত্থান হয়, সেটির পরেই অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেয়। আমরা সেই পরিবর্তনের ধারাকে শক্তিশালী করার চেষ্টা করছি।”
এদিকে, বিএনপি ডিসেম্বরের মধ্যেই জাতীয় নির্বাচন চায় বলে আবারও দাবি জানিয়েছে। গত বুধবার ঢাকায় দলের এক সমাবেশে ভার্চ্যুয়ালি যুক্ত হয়ে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেন, “ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন হতেই হবে।”