এক মিনিট ইন্টারনেট বন্ধের পরিকল্পনা থেকে সরে এল অন্তর্বর্তী সরকার

internet blackout plan cancelled

প্রবল জনরোষ ও সমালোচনার মুখে অবশেষে ‘এক মিনিটের প্রতীকী ইন্টারনেট ব্ল্যাকআউট’ পরিকল্পনা থেকে সরে এসেছে অন্তর্বর্তী সরকার। আজ বৃহস্পতিবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে এক পোস্টে এ তথ্য জানিয়েছেন সংস্কৃতিবিষয়ক উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী।

গতকাল বুধবার অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজ থেকে ‘জুলাই পুনর্জাগরণ অনুষ্ঠানমালা’ ঘোষণা করা হয়। সেই তালিকায় ১৮ জুলাই রাত ৯টায় এক মিনিটের জন্য ইন্টারনেট বন্ধের পরিকল্পনা ছিল। সরকারের ভাষ্যমতে, ২০২৪ সালের ১৮ জুলাই তৎকালীন সরকার আন্দোলন দমাতে মোবাইল ইন্টারনেট বন্ধ করে দিয়েছিল। সেই সময়টিকে স্মরণ করতেই এই প্রতীকী ব্ল্যাকআউটের পরিকল্পনা করা হয়েছিল।

তবে কর্মসূচিটি ঘোষণার পর থেকেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে শুরু হয় ব্যাপক সমালোচনা। অনেকেই একে ‘সস্তা চিন্তা’ বলে আখ্যা দেন, কেউ কেউ এই দিনে ইন্টারনেট ফ্রি করে দেওয়ার প্রস্তাবও দেন।

বিশেষভাবে আলোচনায় আসেন ফেসবুকের সাবেক বাংলাদেশবিষয়ক কর্মকর্তা সাবহানাজ রশীদ দিয়া। তিনি নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক অ্যাকাউন্টে লেখেন, “আমি একেবারে স্তব্ধ হয়ে গেছি—এ ধরনের চরম অর্থহীন প্রস্তাব যে আদৌ আলোচনার টেবিলে উঠতে পারে, সেটাই বিশ্বাস করতে পারছি না।” তিনি আরও বলেন, “এমন সিদ্ধান্ত আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইন, বাংলাদেশের সংবিধান, টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ আইন এবং সদ্য গেজেট হওয়া সাইবার সিকিউরিটি অধ্যাদেশের সরাসরি লঙ্ঘন।”

তাঁর আশঙ্কা, এ ধরনের পরিকল্পনা ভবিষ্যতে বিপজ্জনক দৃষ্টান্ত তৈরি করতে পারে—যেখানে যে কোনো সরকার নির্বিচারে ইন্টারনেট বন্ধ করে দেওয়ার ক্ষমতা দাবি করতে পারে। তিনি বিকল্প হিসেবে ১৮ জুলাই দিনব্যাপী ইন্টারনেট বিনামূল্যে চালুর প্রস্তাব দেন।

সমালোচনার পরিপ্রেক্ষিতে সরকার এখন অনুষ্ঠানমালা থেকে ইন্টারনেট ব্ল্যাকআউটের অংশটি বাদ দিয়েছে। সংস্কৃতিবিষয়ক উপদেষ্টা ফারুকী বলেন, “জনগণের মতামত ও উদ্বেগ আমরা গুরুত্বসহকারে নিয়েছি। অনুষ্ঠানমালার উদ্দেশ্য ছিল গণতান্ত্রিক চেতনার উন্মেষ, বিভ্রান্তি নয়।”