যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক বাহিনী কর্তৃক ইরানের শান্তিপূর্ণ পারমাণবিক স্থাপনাগুলোর ওপর হামলার তীব্র নিন্দা জানিয়েছে ইসলামি প্রজাতন্ত্র ইরান। রবিবার এক আনুষ্ঠানিক বিবৃতিতে ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এই হামলাকে জাতিসংঘ সনদের “চরম ও নজিরবিহীন লঙ্ঘন” এবং আন্তর্জাতিক আইনের পরিপন্থী একটি বড় ধরনের অপরাধ বলে উল্লেখ করে।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে বলা হয়, “জাতিসংঘের সদস্য রাষ্ট্র হিসেবে ইরানের ভূখণ্ড এবং সার্বভৌমত্বের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের এই সামরিক আগ্রাসন একটি ভয়াবহ অপরাধ। এই হামলা একটি যুদ্ধপিপাসু ও আইনবহির্ভূত প্রশাসনের নিষ্ঠুরতা এবং নীতিহীনতার জ্বলন্ত প্রমাণ।”
বিবৃতিতে যুক্তরাষ্ট্রকে এই অপরাধের জন্য সম্পূর্ণভাবে দায়ী করা হয় এবং বলা হয়, “ইরানের বিরুদ্ধে এই হামলার মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েল যৌথভাবে এক ঘৃণ্য অপরাধ সংঘটিত করেছে, যা বিশ্ব শান্তির জন্য মারাত্মক হুমকি।”
ইরান দাবি করেছে, হামলার মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্র জাতিসংঘ সনদের ২, ۴ ও ৫ ধারা, নিরাপত্তা পরিষদের প্রস্তাব ২২৩১ এবং পরমাণু অস্ত্র বিস্তার রোধ চুক্তি (NPT)-কে লঙ্ঘন করেছে। তারা বলেছে, এই হামলা এমন এক সময় ঘটেছে যখন ইসরায়েলি বাহিনীর আগ্রাসন দশম দিনে প্রবেশ করেছে এবং ইরানি জনগণের বিরুদ্ধে যুদ্ধ অব্যাহত রয়েছে।
ইরান জাতিসংঘ, নিরাপত্তা পরিষদ, জাতিসংঘ মহাসচিব, আন্তর্জাতিক আণবিক শক্তি সংস্থা (IAEA) এবং অন্যান্য আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর প্রতি আহ্বান জানিয়েছে, যেন তারা অবিলম্বে এই “অপরাধমূলক আগ্রাসনের” বিরুদ্ধে পদক্ষেপ গ্রহণ করে। পাশাপাশি জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের জরুরি বৈঠক ডাকার আহ্বান জানায় তারা।
বিবৃতিতে IAEA-এর মহাপরিচালককেও তীব্র সমালোচনা করা হয়। বলা হয়, “IAEA-এর পক্ষপাতদুষ্ট ভূমিকা এবং উসকানি প্রদান এই হামলার জন্য পরোক্ষভাবে দায়ী। এই ঘটনায় আন্তর্জাতিক সংস্থা হিসেবে তাদের নিরপেক্ষতার প্রশ্ন উঠেছে।”
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আরও বলে, “যুক্তরাষ্ট্র কূটনৈতিক প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকা অবস্থায় বিশ্বাসঘাতকতা করেছে, ইসরায়েলের গণহত্যাকারী শাসনকে উসকানি দিয়েছে এবং এখন সরাসরি ইরানের ওপর যুদ্ধ চাপিয়ে দিয়েছে।”
ইরান জোর দিয়ে জানায়, “ইসলামি প্রজাতন্ত্র ইরান এর সার্বভৌমত্ব রক্ষা ও জাতীয় স্বার্থ রক্ষায় সর্বশক্তি দিয়ে প্রতিরোধ গড়ে তুলবে।”