ইরান পারমাণবিক অস্ত্র তৈরি করছে না : মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা

Tulsi gabbards US Intelligence Agency

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় গোয়েন্দা সংস্থার (ডিএনআই) পরিচালক তুলসী গ্যাবার্ড জানিয়েছেন, মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর মূল্যায়ন অনুযায়ী, ইরান বর্তমানে সক্রিয়ভাবে পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির চেষ্টা করছে না।

তবে, ইরানের বর্তমান সরকারের বিভিন্ন মহলে পারমাণবিক অস্ত্র তৈরি নিয়ে আলোচনা বেড়েছে, যা আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের জন্য উদ্বেগের কারণ হতে পারে।

মঙ্গলবার (২৫ মার্চ) সংবাদমাধ্যম নিউইয়র্ক পোস্টে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে আসে। প্রতিবেদনে বলা হয়, যুক্তরাষ্ট্রের পার্লামেন্ট কংগ্রেসের উচ্চকক্ষ সিনেটের ইন্টেলিজেন্স কমিটির শুনানির উপর ভিত্তি করে এই বিশ্লেষণ করা হয়েছে।

ডিএনআই পরিচালক তুলসী গ্যাবার্ড সিনেটের শুনানিতে বলেন, মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা (আইসি) এখনো মনে করে, ইরান পারমাণবিক অস্ত্র তৈরি করছে না এবং সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ খামেনি ২০০৩ সালে স্থগিত করা পারমাণবিক অস্ত্র কর্মসূচির অনুমোদন দেননি।

তিনি আরও জানান, যদিও ইরান এখন পর্যন্ত পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির কোনো সক্রিয় পদক্ষেপ নেয়নি, তবে দেশটির সামাজিক ও রাজনৈতিক পরিসরে পারমাণবিক অস্ত্র নিয়ে আলোচনা বেড়েছে, যা পূর্বে এক ধরনের নিষিদ্ধ বিষয় ছিল।

তুলসী গ্যাবার্ড মন্তব্য করেন, এই আলোচনা ইরানের সিদ্ধান্ত গ্রহণকারী গোষ্ঠীর ভেতর যারা পারমাণবিক অস্ত্রের পক্ষে, তাদের উৎসাহিত করতে পারে।

তিনি আরও বলেন, ইরানের ইউরেনিয়ামের মজুত সর্বোচ্চ স্তরে পৌঁছেছে, যা একটি পারমাণবিক অস্ত্রবিহীন রাষ্ট্রের জন্য নজিরবিহীন ঘটনা।

এছাড়া, গ্যাবার্ড উল্লেখ করেন, ইরানের ওপর আরোপিত নতুন নিষেধাজ্ঞাগুলোর প্রভাব এখনো সম্পূর্ণভাবে কার্যকর হয়নি, তবে তেহরান অবশ্যই ওই ‘বার্তা’ শুনেছে।

এর আগে, ২০২৪ সালের অক্টোবর মাসে যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে বলা হয়েছিল, ইরান পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির সিদ্ধান্ত নেয়নি। যদিও ইসরায়েলি হামলার ফলে হিজবুল্লাহ নেতাদের মৃত্যু এবং ইসরায়েলে দুটি বড় ধরনের হামলার ব্যর্থতার পরও এ অবস্থান বজায় রেখেছে।

ডিএনআই শুনানির পাশাপাশি, মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর বার্ষিক হুমকি মূল্যায়ন প্রতিবেদনও প্রকাশিত হয়েছে। প্রতিবেদনে পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে, ইরান তার শক্তিশালী ক্ষেপণাস্ত্র সক্ষমতা এবং সম্প্রসারিত পারমাণবিক কর্মসূচি ব্যবহার করে আঞ্চলিক প্রভাব বাড়াতে এবং শাসনব্যবস্থার স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করতে চেষ্টা করবে।

এতে আরও বলা হয়েছে, ইরান এখনো ইসরায়েল এবং অন্যান্য আন্তর্জাতিক প্রতিদ্বন্দ্বীদের বিরুদ্ধে কৌশলগত পদক্ষেপ গ্রহণের মাধ্যমে তার প্রতিরক্ষা সক্ষমতা শক্তিশালী করতে চায়। তবে, আঞ্চলিক ও অভ্যন্তরীণ চ্যালেঞ্জগুলি দেশটির উচ্চাকাঙ্ক্ষা এবং সক্ষমতাকে চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলছে।

এছাড়া, প্রতিবেদনে ইরানের সামরিক খাতে বিনিয়োগের পরিকল্পনা এবং মার্কিন নাগরিকদের ওপর সম্ভাব্য হুমকি প্রদানের বিষয়টি তুলে ধরা হয়েছে। তেহরান, পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞার প্রভাব কমাতে এবং শাসনব্যবস্থাকে শক্তিশালী করার জন্য অন্যান্য গ্লোবাল সাউথ দেশের সঙ্গে সম্পর্ক জোরদার করছে।

প্রতিবেদনে আরও জানানো হয়েছে, রাশিয়া একটি নতুন স্যাটেলাইট তৈরি করছে, যা পারমাণবিক অস্ত্র বহন করতে সক্ষম এবং এটি যুক্তরাষ্ট্র ও বিশ্বের জন্য ‘বিধ্বংসী পরিণতি’ ডেকে আনতে পারে।