গণঅভ্যুত্থানকালে সেনানিবাসে আশ্রয় গ্রহণকারী ব্যক্তিদের বিষয়ে অবস্থান জানাল সেনাবাহিনী

ISPR List

জুলাই-আগস্ট মাসে ঘটে যাওয়া ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থান ও পরবর্তী অস্থির পরিস্থিতিতে সেনানিবাসে আশ্রয় নেওয়া বিভিন্ন শ্রেণিপেশার ব্যক্তিদের বিষয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে অবস্থান জানিয়েছে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী। বৃহস্পতিবার (২২ মে) এক বিবৃতিতে সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে জানানো হয়, তৎকালীন সরকার পতনের পর কিছু কুচক্রী মহলের তৎপরতায় দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ভয়াবহভাবে অবনতির দিকে যায়।

বিবৃতিতে বলা হয়, ওই সময়ে সরকারি দপ্তর ও থানা লক্ষ্য করে হামলা, রাজনৈতিক নেতাকর্মী ও সমর্থকদের বাড়িঘরে অগ্নিসংযোগ, মব জাস্টিস, চুরি, ডাকাতি ইত্যাদি সহিংস কর্মকাণ্ড ব্যাপক আকার ধারণ করে। ফলে দেশের সাধারণ মানুষের মধ্যে নিরাপত্তাহীনতার এক গভীর অনুভূতি ছড়িয়ে পড়ে।

এই প্রেক্ষাপটে, ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন সেনানিবাসে জীবন রক্ষার জন্য অনেকেই আশ্রয় প্রার্থনা করেন। বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়, “উদ্ভূত আকস্মিক ও নাজুক পরিস্থিতিতে আশ্রয়প্রার্থীদের পরিচয় যাচাই করার চেয়ে তাদের জীবন রক্ষা করাকে প্রাধান্য দেওয়া হয়।”

সেনাবাহিনীর তথ্য অনুযায়ী, আশ্রয় গ্রহণকারীদের মধ্যে ছিলেন ২৪ জন রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব, ৫ জন বিচারক, ১৯ জন অসামরিক প্রশাসনের কর্মকর্তা, ৫১৫ জন পুলিশ সদস্য, বিভিন্ন পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তা ও বিবিধ পেশার আরও ১২ জন। এদের সঙ্গে ৫১টি পরিবারসহ মোট ৬২৬ জনকে সাময়িকভাবে আশ্রয় দেওয়া হয়েছিল।

বিবৃতিতে আরও জানানো হয়, “শুধু মানবিক দায়বদ্ধতার জায়গা থেকে আশ্রয়প্রার্থীদের আশ্রয় দেওয়া হয় এবং তাদের অধিকাংশই ১-২ দিনের মধ্যে সেনানিবাস ত্যাগ করেন। যাদের বিরুদ্ধে নির্দিষ্ট অভিযোগ ছিল, তাদের ৫ জনকে যথাযথ আইনি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কাছে হস্তান্তর করা হয়।”

এ প্রসঙ্গে সেনাবাহিনী স্মরণ করিয়ে দেয়, ২০২৪ সালের ১৮ আগস্ট আইএসপিআরের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ বিষয়টি আনুষ্ঠানিকভাবে জানানো হয়েছিল এবং ওই দিনেই ১৯৩ জন ব্যক্তির একটি তালিকা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়।

সেনাবাহিনী দাবি করে, “তৎকালীন পরিস্থিতিতে আশ্রয়প্রার্থীদের প্রাণনাশের আশঙ্কা থাকায় মানবিক বিবেচনায় সাময়িক আশ্রয় দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু কিছু স্বার্থান্বেষী মহল উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে বিভ্রান্তিকর তথ্য ছড়িয়ে সেনাবাহিনীর ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ করার অপচেষ্টা চালাচ্ছে।”

বিবৃতির শেষে সেনাবাহিনী জনগণকে বিভ্রান্তিমূলক প্রচারের বিরুদ্ধে সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়ে পুনর্ব্যক্ত করে, “বাংলাদেশ সেনাবাহিনী দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষায় প্রতিশ্রুতিবদ্ধ এবং সব সময় পেশাদারিত্ব, নিষ্ঠা ও আস্থার সঙ্গে জাতির পাশে থাকবে।”

ISPR List 2