গাজায় ফিলিস্তিনি জনগণের বিরুদ্ধে ইসরায়েল ‘ক্ষুধাকে যুদ্ধের অস্ত্র’ হিসেবে ব্যবহার করছে — এমনই অভিযোগ করেছে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল। লন্ডনভিত্তিক এ সংস্থাটি বলছে, ইসরায়েল কর্তৃক সাধারণ মানুষের খাদ্য, পানি ও চিকিৎসাসেবা আটকে রাখা এবং জীবনযাপনের মৌলিক চাহিদাকে ধ্বংস করে দেওয়াটাই একটি সচেতন কৌশল, যা গণহত্যার পর্যায়ে পড়ে।
বৃহস্পতিবার (৩ জুলাই) এক বিবৃতিতে অ্যামনেস্টি জানায়, গাজা উপত্যকার অবস্থা এখনো ভয়াবহ, বিশেষ করে শিশুদের জন্য। সংস্থাটির সেক্রেটারি জেনারেল অ্যাগনেস কালামার্ড বলেন, “ইসরায়েল মানুষের মৌলিক জীবনযাপন ব্যবস্থাকে ধ্বংস করছে — এটি শারীরিকভাবে ধ্বংস করে ফেলারই একটি রূপ, যা জাতিসংঘ ঘোষিত গণহত্যার সংজ্ঞায় পড়ে।”
শিশুদের জন্য পরিস্থিতি ভয়াবহ
প্রতিবেদনে বলা হয়, অক্টোবর ২০২৩ থেকে চলমান সংঘাতে এখন পর্যন্ত অন্তত ৬৬ জন শিশু অপুষ্টিজনিত কারণে মারা গেছে। আরও বহু শিশু প্রাণ হারিয়েছে চিকিৎসার অভাবে, যা প্রতিরোধযোগ্য ছিল যদি খাদ্য ও ওষুধ সরবরাহ করা যেত।
ত্রাণ ব্যবস্থাও রক্ষা করছে না
অ্যামনেস্টি জানায়, ইসরায়েলের অনুমতি না মেলায় প্রতিদিন শত শত ত্রাণবাহী ট্রাক গাজার বাইরে অপেক্ষা করেও ভেতরে ঢুকতে পারছে না। ত্রাণ নিতে গিয়ে বহু ফিলিস্তিনি নিহত বা আহত হয়েছেন — কেউ বিতরণ পয়েন্টে, কেউ বা পথে।
তারা বলছে, গাজায় তথাকথিত ইসরায়েলি পরিচালিত হিউম্যানিটারিয়ান ফাউন্ডেশন (GHF) আদতে একটি “ফাঁদ”, যেখানে ক্ষুধার্ত মানুষ ত্রাণের আশায় গিয়ে প্রাণ হারাচ্ছেন।
এই পরিস্থিতিতে অ্যামনেস্টি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে আহ্বান জানায়, যেন অবিলম্বে ইসরায়েলের এই মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিষয়ে পদক্ষেপ নেওয়া হয় এবং গাজায় অবরোধ তুলে সাধারণ মানুষের বেঁচে থাকার পথ উন্মুক্ত করা হয়।