গাজায় চলমান জাতিগত নিধন (জেনোসাইড) বন্ধে ইসরায়েলের ওপর চাপ সৃষ্টি ও ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতির দাবিতে ইতালির রাজধানী রোমসহ দেশটির বিভিন্ন শহরে সোমবার আড়াই লাখের বেশি মানুষ বিক্ষোভ করেছেন।
রোমে প্রায় দুই লাখ শিক্ষার্থী প্রধান টার্মিনি রেলস্টেশনের সামনে জড়ো হয়ে ফিলিস্তিনের পতাকা হাতে নিয়ে “ফ্রি প্যালেস্টাইন” স্লোগান দেন। বিক্ষোভের কারণে শহরের বাস ও মেট্রো সেবা ব্যাহত হয়, রেল সংস্থাগুলো বিলম্ব ও বাতিলের সতর্কতা জারি করে। আয়োজকদের দাবি, মিলানে ৫০ হাজার এবং বোলোনিয়ায় ১০ হাজারের বেশি মানুষ বিক্ষোভে অংশ নেন। তুরিন, ফ্লোরেন্স, নেপলস ও সিসিলিতেও গণজোয়ার দেখা গেছে।
এদিকে ইতালির শ্রমিক সংগঠন ইউএসবি ইউনিয়ন ২৪ ঘণ্টার সাধারণ ধর্মঘটের ডাক দিয়েছে। বন্দরশহর জেনোয়া ও লিভর্নোতে শ্রমিকরা প্রবেশপথ অবরোধ করে ধর্মঘটে যোগ দেন। তাঁদের দাবি, ইতালি সরকার যেন ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করে এবং ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দেয়।
বর্তমানে ইউরোপের অধিকাংশ দেশ ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দিয়েছে। গতকাল যুক্তরাজ্য, কানাডা, অস্ট্রেলিয়া ও পর্তুগালের স্বীকৃতির পর ফ্রান্সসহ আরও পাঁচটি দেশ স্বীকৃতি দিতে যাচ্ছে। এখনো স্বীকৃতি দেয়নি কেবল জার্মানি ও ইতালি। তবে জরিপে দেখা গেছে, ইতালির প্রায় ৪১ শতাংশ নাগরিক ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দেওয়ার পক্ষে।
ফ্রান্স ও সৌদি আরব নিউইয়র্কে দ্বিরাষ্ট্রভিত্তিক সমাধান এগিয়ে নিতে সম্মেলনের আয়োজন করেছে। এতে ফরাসি প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল মাখোঁ সরাসরি এবং সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান ভার্চ্যুয়ালি অংশ নেবেন। আশা করা হচ্ছে, এই সম্মেলন থেকেই ফ্রান্স, মাল্টা, লুক্সেমবার্গ, বেলজিয়াম, অ্যান্ডোরা ও সান ম্যারিনো একযোগে ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দেবে।
জাতিসংঘও আশা করছে, এই সম্মেলন দ্বিরাষ্ট্রভিত্তিক সমাধানের নতুন গতি তৈরি করবে। তবে যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েল এ সম্মেলন বর্জন করেছে এবং ফিলিস্তিন রাষ্ট্র গঠনের বিরোধিতা করছে।
১৯৯৩ সালের অসলো চুক্তির মাধ্যমে শুরু হওয়া দ্বিরাষ্ট্রভিত্তিক সমাধান দীর্ঘদিন বন্ধ থাকার পর, সাম্প্রতিক এই স্বীকৃতির ঢেউ এবং ইতালিসহ ইউরোপ জুড়ে বিক্ষোভ শান্তি প্রক্রিয়াকে নতুন করে আলোচনার টেবিলে ফিরিয়ে আনছে।