ঐতিহাসিক ‘জুলাই গণঅভ্যুত্থান, পূরণ হয়নি ছাত্রদের স্বপ্নের সনদ

july uprising anniversary

এক বছর আগে ২০২৪ সালের ৫ জুন হাইকোর্টের এক ঐতিহাসিক রায়ে বাতিল করা হয় ২০১৮ সালে জারি করা সরকারি চাকরিতে মুক্তিযোদ্ধা কোটা বাতিল সংক্রান্ত পরিপত্র। এতে পুনর্বহাল হয় ৩০ শতাংশ মুক্তিযোদ্ধা কোটা, যা দেশের শিক্ষার্থী ও চাকরিপ্রত্যাশীদের মধ্যে তীব্র অসন্তোষের জন্ম দেয়।

এই রায়ের প্রতিবাদে পরদিন ৬ জুন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে বিক্ষোভে ফেটে পড়ে ছাত্রসমাজ। কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সামনে থেকে উচ্চারিত হয় বিখ্যাত স্লোগান— “কোটা না মেধা? মেধা মেধা!”। আন্দোলনের ধারাবাহিকতায় ১ জুলাই বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ব্যানারে শুরু হয় লাগাতার কর্মসূচি। কেন্দ্রীয় লাইব্রেরি থেকে রাজু ভাস্কর্য পর্যন্ত বিক্ষোভ সমাবেশ, ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন, এবং ৪ জুলাই পর্যন্ত তিন দিনের কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়।

১১ জুলাই হাইকোর্ট জানায়, সরকার চাইলে কোটা পদ্ধতি পরিবর্তন করতে পারে। কিন্তু ছাত্রদের বিক্ষোভ তাতে থামেনি। বরং তীব্র হয়— শুরু হয় ‘বাংলা ব্লকেড’ নামে এক অভূতপূর্ব আন্দোলন। আন্দোলনকারীদের ওপর দমন-পীড়ন শুরু হয়। ১৫ জুলাই ছাত্রলীগ ও সরকারি দলের কর্মীদের হামলায় বহু শিক্ষার্থী আহত হন। পরদিন রংপুরে আন্দোলনকারী আবু সাইদকে পুলিশ গুলি করে হত্যা করলে আন্দোলন দেশব্যাপী রূপ নেয়।

১৭ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত চলে টানা বিক্ষোভ, যা পরিণত হয় সরকার পতনের আন্দোলনে। শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকার ছাত্র ও জনতার ওপর গুলি চালায়, যার ফলে শহীদ হন প্রায় দুই হাজার এবং আহত হন ১০ হাজারের বেশি মানুষ। শেষমেশ, ৩৬ জুলাই তথা ৫ আগস্ট সংঘটিত হয় ঐতিহাসিক ‘জুলাই গণঅভ্যুত্থান’, পতন ঘটে শেখ হাসিনার সরকার।

এক বছর পেরিয়ে আবার এসেছে সেই প্রতীক্ষিত মাস—জুলাই। এখন অপেক্ষা শুধু ছাত্র-জনতার স্বপ্নের ‘জুলাই সনদ’ ঘোষণার। তবে বর্তমান সরকারের নিরবতা এবং প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নে গড়িমসির কারণে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন অভ্যুত্থানকালীন নেতৃত্বাধীন ছাত্র সংগঠনগুলোর নেতাকর্মীরা।