ঈদুল আজহার দ্বিতীয় দিনেও রাজধানী ঢাকা সহ সারা দেশে কোরবানির ব্যস্ততা লক্ষ্য করা গেছে। ধর্মীয় বিধান অনুযায়ী ঈদের পরবর্তী দিনগুলোতেও কোরবানি বৈধ হওয়ায়, অনেকেই আজ (৮ জুন) পশু কোরবানি করেছেন। এর পেছনে অন্যতম কারণ ছিল ঈদের দিন কসাই সংকট ও সময়ের অভাব।
পুরান ঢাকা, লালবাগ, টিকাটুলী, মুগদা ও বাসাবোসহ বিভিন্ন এলাকায় সকাল থেকেই কোরবানির পশু জবাই ও মাংস প্রস্তুতের দৃশ্য দেখা গেছে। অনেক পরিবার ইচ্ছে করেই আজ কোরবানি করেছেন, যেন স্বাচ্ছন্দ্যে সময় নিয়ে ধর্মীয় বিধান পালন করা যায়।
ফজরের নামাজ শেষ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই কোরবানির আয়োজন শুরু করেন অনেকে। স্থানীয় বাসিন্দা হাসান বলেন, “ঈদের দিন কসাইয়ের চরম ব্যস্ততা থাকে, তাই আমরা আগেই সিদ্ধান্ত নিয়েছি আজ কোরবানি করবো। সকালে গরু জবাই দিয়েছেন, কসাইরাও কাজে নেমে পড়েছেন।”
তিনি আরও বলেন, “কোরবানির মূল উদ্দেশ্য আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন। ঈদের দিন হোক বা পরের দিন, নিয়ত ঠিক থাকলে সওয়াব একই। এখন কবুল করার মালিক একমাত্র আল্লাহ।”
আরেক বাসিন্দা শরিফুল ইসলাম জানান, “আমরা মূলত কসাই না পাওয়ায় আজ কোরবানি দিচ্ছি। বাচ্চারা প্রথমে একটু মন খারাপ করেছিল, তবে এখন খুশি। আল্লাহর সন্তুষ্টিই সবচেয়ে বড় বিষয়।”
খিলগাঁওয়ের বাসিন্দা মো. হাসান বলেন, “তিন দিন কোরবানি দেওয়ার সুযোগ রয়েছে। সওয়াবের ক্ষেত্রে কোনো পার্থক্য নেই। আমরা ধর্মীয় বিধান মেনে মাংস তিনভাগ করে বিতরণ করছি।”
বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় সফল উদ্যোগ সিটি করপোরেশনের
ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন জানিয়েছে, ঈদের দিনের কোরবানির বর্জ্য রাতের মধ্যেই অপসারণ করা হয়েছে। রোববার ও সোমবারও বর্জ্য অপসারণের কার্যক্রম চলবে। এতে রাজধানীবাসী সুবিধামতো সময়ে কোরবানি করতে পারছেন।
ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন সূত্র জানায়, তাদের ৭৫টি ওয়ার্ডে ঈদের দিন ১,৩৩,৩১৭টি পশু কোরবানি হয়েছে। প্রতিটি ওয়ার্ড থেকে বর্জ্য সেকেন্ডারি ট্রান্সফার স্টেশনে স্থানান্তরের পর মাতুয়াইল স্যানিটারি ল্যান্ডফিলে ফাইনাল ডাম্পিং করা হচ্ছে। ইতোমধ্যে ১২ হাজার টন বর্জ্য সেখানে ডাম্প করা হয়েছে।
এ বছর বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ১০ হাজারের বেশি পরিচ্ছন্নতাকর্মী ও ২০৭৯টি যানবাহন মাঠ পর্যায়ে কাজ করছে। এসব যানবাহনের মধ্যে রয়েছে ২০৭টি ডাম্প ট্রাক, ৪৪টি কম্পেক্টর, ৩৯টি কন্টেইনার ক্যারিয়ার ও ১৬টি পে-লোডার।
সিটি করপোরেশন কর্তৃপক্ষ জানায়, নিয়ম মেনে কোরবানি ও দ্রুত বর্জ্য অপসারণের কারণে এবার ঈদের পর রাজধানীতে দুর্গন্ধ বা যানজট তেমন দেখা যায়নি।