মার্টিম মুনিজে পুলিশের অভিযানের বিরুদ্ধে লিসবনে হাজারো মানুষের বিক্ষোভ

Martim Moniz police operation

লিসবন: লিসবনের মার্টিম মুনিজ এলাকায় পুলিশের সাম্প্রতিক অভিযানের বিরুদ্ধে শনিবার হাজারো মানুষ রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ করেছে। অভিবাসী সংগঠন ও বামপন্থি দলগুলোর উদ্যোগে আয়োজিত এ বিক্ষোভে প্রায় ১৫ হাজার মানুষ অংশ নেয়।

বিক্ষোভকারীদের অভিযোগ, পুলিশের এ ধরনের অভিযান মানবাধিকারের লঙ্ঘন এবং অভিবাসীদের বিরুদ্ধে বৈষম্যমূলক আচরণ। বিক্ষোভে “ফ্যাসিস্টরা, তোমাদের সময় শেষ; অভিবাসীরা থাকবে, তোমরা চলে যাবে”—এমন স্লোগান দিতে দেখা যায়। বাংলাদেশি সংগঠনসহ বিভিন্ন অভিবাসী গোষ্ঠীর সদস্যরা এবং হিজাব পরে নারীরাও এই বিক্ষোভে অংশ গ্রহন করেন।

গত ১৯ ডিসেম্বর লিসবনের রুয়া ডো বেনফর্মোসো এলাকায় একটি পুলিশের অভিযান নিয়ে বিতর্ক শুরু হয়। এ ঘটনায় বামপন্থি দল ও মানবাধিকার সংগঠনগুলো তীব্র প্রতিবাদ জানায়। তবে সরকারের দাবি, পুলিশ নিয়ম মেনেই অভিযান চালিয়েছে।

পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়, এ ধরনের অভিযান নতুন কিছু নয়। সরকারের নিরাপত্তা সংস্থাও জানায়, অভিযানে কোনো অনিয়ম হয়নি।

সিরীয় এক অভিবাসী বলেন, তিনি লিসবনে তিন বছর ধরে বসবাস করছেন, তিনি বলেন, “পর্তুগালে আমি কখনো বর্ণবাদের শিকার হইনি। কিন্তু যুক্তরাজ্যে এমন অভিজ্ঞতা হয়েছে। লিসবনে আমি নিজেকে নিরাপদ মনে করি।”

বাংলাদেশি অভিবাসী জাবেদ হক, যিনি দীর্ঘদিন ধরে পর্তুগালে বসবাস করছেন, তিনি বলেন, “এর আগে পুলিশের এমন ন্যক্কারজনক অভিযান কখনো দেখিনি। বাংলাদেশি অধ্যুষিত এলাকায় এমন ন্যক্কারজনক অভিযানের তীব্র নিন্দা জানাই।”

protest in Lisbon

আইনজীবী রিকার্ডো সা ফেরনান্দেস বলেন, “আজকের বিক্ষোভ পর্তুগিজদের পক্ষ থেকে একটি বার্তা। তারা বৈষম্য মেনে নেবে না। আমরা সবাই একসঙ্গে আছি।”

বিক্ষোভের পাশাপাশি ডানপন্থি দলগুলো পুলিশের সমর্থনে পাল্টা সমাবেশ আয়োজন করলেও এতে খুব কমসংখ্যক লোক উপস্থিত হয়। ফেসবুকে একটি পোস্টে কোয়েলহো উল্লেখ করেন যে তার প্যারিশে আরও পুলিশের প্রয়োজন, কারণ সেখানে অপরাধের মাত্রা অত্যন্ত বেশি। তবে তিনি জোর দিয়ে বলেন, অপরাধ “সব জাতি, জাতিগোষ্ঠী, ধর্ম এবং সামাজিক গোষ্ঠীর মধ্যে বিদ্যমান। এটি অভিবাসনের সমস্যা নয়।”

তিনি আরও বলেন, “আমাদের একটি শক্তিশালী ও সম্মানজনক পুলিশ বাহিনী দরকার, যারা সংবিধান রক্ষা করবে এবং জনগণের কাছে থাকবে। একই সঙ্গে তাদের উপযুক্ত বেতন ও আইনি সুরক্ষা নিশ্চিত করা জরুরি।”

বিক্ষোভে বৈচিত্র্যপূর্ণ অংশগ্রহণ এবং পুলিশের বিরুদ্ধে ক্ষোভ স্পষ্টভাবে ফুটে উঠলেও, বিষয়টি নিয়ে বিতর্ক এখনো চলমান।