এমসি কলেজে তালামীয নেতাকে রড দিয়ে পেটানোর অভিযোগ শিবিরের বিরুদ্ধে

Mc college Talamij

সিলেটের ঐতিহ্যবাহী এমসি কলেজে (মুরারিচাঁদ কলেজ) ফেসবুকে মন্তব্যের জেরে আনজুমানে তালামীযে ইসলামিয়ার এক নেতাকে রড দিয়ে পেটানোর অভিযোগ উঠেছে ছাত্রশিবিরের নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে। বুধবার (গতকাল) রাত ১২টার দিকে কলেজ ছাত্রাবাসে এ ঘটনা ঘটে।

ভুক্তভোগীর অভিযোগ
মারধরের শিকার মো. মিজানুর রহমান কলেজের ইংরেজি বিভাগের তৃতীয় বর্ষের ছাত্র এবং তালামীযে ইসলামিয়া এমসি কলেজ শাখার সহ-তথ্যপ্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক। তাঁর দাবি, ছাত্রশিবিরের প্রায় ১০-১২ জন নেতা-কর্মী তাঁর কক্ষে ঢুকে ফেসবুকে দেওয়া এক মন্তব্যের জেরে তাঁকে বেধড়ক মারধর করেন।

মিজানুর রহমান বলেন, “আমি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে রক্ত দেওয়ার পরও বর্তমান নেতৃত্বের সঙ্গে আগের ছাত্রলীগের আচরণের কোনো পার্থক্য নেই—এই ধরনের একটি মন্তব্য করি। এই মন্তব্যের কারণেই রাতে শিবিরের নেতা-কর্মীরা আমার কক্ষে এসে হামলা চালান। তারা আমাকে রড দিয়ে মারধর করেন এবং আমার সঙ্গে থাকা এক জ্যেষ্ঠ শিক্ষার্থীকে বাধা দেওয়ার কারণে আঘাত করেন।”

তিনি আরও অভিযোগ করেন, হামলাকারীদের মধ্যে শিবিরের সভাপতি ইসমাঈল খান, নাজমুল, আদনান এবং সাদমানসহ কয়েকজন ছিলেন।

তবে ছাত্রশিবিরের সভাপতি ইসমাঈল খান অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তিনি বলেন, “এই ঘটনায় ছাত্রশিবিরের কেউ জড়িত নয়। বরং আমাদের জনপ্রিয়তা নষ্ট করতে তৃতীয় পক্ষ ষড়যন্ত্র করছে। কলেজ ছাত্রাবাসে মিজানুর রহমান ও আরেক শিক্ষার্থী জাকিরুল ইসলামের মধ্যে নিজেদের ব্যক্তিগত কারণে ঝামেলা হয়েছে। আমরা তাদের হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার ব্যবস্থা করেছি।”

ইসমাঈল খান আরও বলেন, “এ সময় কলেজে তিন দিনব্যাপী বইমেলা চলছে, যেখানে আমরা স্টল পরিচালনা করছি। বুধবার রাতে ঘটনার সময় আমি স্টলে উপস্থিত ছিলাম। যদি আমাদের কেউ জড়িত থাকত, তবে আমি আহতদের হাসপাতালে নিয়ে যেতাম না।”

ঘটনার অন্য পক্ষ জাকিরুল ইসলামও দাবি করেছেন, মিজানুর রহমান তাঁকে মারধর করেছেন। তবে তাঁর সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। ফেসবুকে একটি ভিডিওতে তিনি দাবি করেন, “মিজানুর রহমান ছাত্রলীগের একজন সদস্য। তিনি সাধারণ ছাত্রদের তথ্য ছাত্রলীগের কাছে পৌঁছে দেন।”

এ বিষয়ে এমসি কলেজের অধ্যক্ষ আবুল আনাম মো. রিয়াজ জানান, ঘটনার প্রকৃত সত্য জানতে ইসলামের ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক হুমায়ুন কবির চৌধুরীর নেতৃত্বে পাঁচ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটিকে আগামী ১০ কার্যদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে।

এ ঘটনায় কলেজ প্রশাসন ও সংশ্লিষ্ট সংগঠনগুলো সতর্ক অবস্থান নিয়েছে এবং শিক্ষার্থীদের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করছে।