রাজধানীর মিটফোর্ড এলাকায় প্রকাশ্যে ভাঙারির ব্যবসায়ী লাল চাঁদ সোহাগকে (৩৯) নৃশংসভাবে হত্যার ঘটনায় তদন্তে নতুন মোড় নিয়েছে। ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) জানিয়েছে, এ হত্যাকাণ্ড চাঁদাবাজির কারণে নয়, বরং একটি ভাঙারির দোকানের মালিকানা এবং আয়-ব্যয় সংক্রান্ত দ্বন্দ্ব থেকেই এ হত্যাকাণ্ড ঘটেছে।
শনিবার (১২ জুলাই) এক সংবাদ ব্রিফিংয়ে লালবাগ বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) মোহাম্মদ জসীম উদ্দিন বলেন, “আমরা এখন পর্যন্ত চাঁদাবাজির কোনো প্রমাণ পাইনি। হত্যার পেছনে মূল কারণ দোকানের দখল ও অর্থনৈতিক বিরোধ। তবে তদন্ত এখনো চলমান, সব দিক বিবেচনায় নেওয়া হচ্ছে।”
পুলিশ জানিয়েছে, সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ করে পাঁচজন সন্দেহভাজনকে আটক করা হয়েছে। এর মধ্যে মামলার প্রধান আসামি মাহিনকেও জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। তাদের কাছ থেকে পাওয়া তথ্য তদন্তে নতুন মাত্রা যোগ করেছে।
ডিসি জসীম বলেন, “এটি প্রাথমিকভাবে একটি ব্যবসায়িক দ্বন্দ্বের ফল। তবে আমরা খতিয়ে দেখছি, এর সঙ্গে কোনো রাজনৈতিক প্ররোচনা বা প্রভাবশালী গোষ্ঠীর সম্পৃক্ততা রয়েছে কি না। তদন্তে কোনো রকম পক্ষপাত থাকবে না।”
৯ জুলাই সন্ধ্যায় মিটফোর্ড হাসপাতালের সামনে জনসমক্ষে কুপিয়ে হত্যা করা হয় সোহাগকে। এ ঘটনার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি হয়। দেশজুড়ে ফেসবুক ও অন্যান্য প্ল্যাটফর্মে ক্ষোভ ও নিন্দা জানানো হয়।
এদিকে, নিহত সোহাগের বোন কোতোয়ালি থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছেন। মামলায় ১৯ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে এবং অজ্ঞাতপরিচয় আরও ১০-১৫ জনকে আসামি করা হয়েছে।
পুলিশের দাবি, এই হত্যাকাণ্ড ছিল পূর্বপরিকল্পিত। আটককৃতদের জবানবন্দি ও অন্যান্য আলামতের ভিত্তিতে দ্রুতই আদালতে তাদের রিমান্ডের আবেদন করা হবে।
র্যাব মহাপরিচালক এক প্রতিক্রিয়ায় বলেন, “অপরাধী যে দলেরই হোক, কিংবা যতই প্রভাবশালী হোক, কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না।”