আট বছর পর আবারও সরাসরি ভর্তি পরীক্ষা আয়োজন করতে যাচ্ছে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়। শনিবার (৩১ মে) বেলা ১১টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত দেশের ৬৪ জেলা শহরের ৮৭৯টি কেন্দ্রে একযোগে এই ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। এ পরীক্ষায় অংশ নিচ্ছেন ৫ লাখ ৫০ হাজারেরও বেশি ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থী।
জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ এস এম আমানুল্লাহ জানিয়েছেন, দীর্ঘ সময় পর আবারও সরাসরি পরীক্ষা চালুর সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে যাতে মেধাভিত্তিক ভর্তি প্রক্রিয়া নিশ্চিত করা যায়। তিনি বলেন, “সারাদেশব্যাপী এই পরীক্ষা সুষ্ঠুভাবে আয়োজনের জন্য আমরা সর্বাত্মক প্রস্তুতি নিয়েছি। কেন্দ্র সচিব ও সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের যথাযথভাবে দায়িত্ব বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে।”
উল্লেখ্য, ২০১৪-১৫ শিক্ষাবর্ষ পর্যন্ত জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষার মাধ্যমে শিক্ষার্থী ভর্তি করা হতো। এরপর ২০১৫-১৬ শিক্ষাবর্ষ থেকে কেবল এসএসসি ও এইচএসসি’র জিপিএর ভিত্তিতে ভর্তি কার্যক্রম চালু হয়। চলতি ২০২4-২৫ শিক্ষাবর্ষে আবারও পূর্বের পরীক্ষানির্ভর নিয়মে ফিরেছে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়।
পরীক্ষাটি এমসিকিউ (MCQ) পদ্ধতিতে ১০০ নম্বরের হবে, যার সময়সীমা এক ঘণ্টা। প্রতি সঠিক উত্তরে ১ নম্বর পাওয়া যাবে, তবে ভুল উত্তরের জন্য কোনো নম্বর কাটা হবে না। পাস নম্বর নির্ধারণ করা হয়েছে ৩৫।
মেধাতালিকা তৈরি করা হবে মোট ২০০ নম্বরের ভিত্তিতে, যেখানে এমসিকিউ অংশের পূর্ণ নম্বরের সঙ্গে এসএসসি পরীক্ষার জিপিএর ৪০ শতাংশ এবং এইচএসসি পরীক্ষার জিপিএর ৬০ শতাংশ যোগ করে ফলাফল প্রকাশ করা হবে।
পরীক্ষাকেন্দ্র ও অংশগ্রহণকারীরা
ঢাকা বিভাগে সবচেয়ে বেশি ২৪৭টি কেন্দ্র স্থাপন করা হয়েছে। খুলনা বিভাগে ১৫৬টি, রাজশাহীতে ১৪৩টি, চট্টগ্রামে ১৩৪টি, রংপুরে ৯৬টি, বরিশালে ৫৯টি এবং সিলেট বিভাগে ৪৪টি কেন্দ্র নির্ধারণ করা হয়েছে। সরকারি কলেজ ছাড়াও স্থানীয় কিছু বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান পরীক্ষাকেন্দ্র হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে।
আসন সংখ্যা ও কোটা
জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে বর্তমানে ৮৮১টি কলেজে স্নাতক (সম্মান) কোর্স চালু রয়েছে, যার মধ্যে ২৬৪টি সরকারি এবং ৬১৭টি বেসরকারি। ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষে সম্মান শ্রেণির আসন সংখ্যা ছিল ৪ লাখ ৩৬ হাজার ২৮৫টি। ডিগ্রি (পাস) কোর্সে ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষে আসন সংখ্যা ছিল ৪ লাখ ২১ হাজার ৯৯০টি।
প্রত্যেক বিষয়ে সর্বোচ্চ ৮টি আসন সংরক্ষিত থাকবে বিভিন্ন কোটার জন্য। এর মধ্যে রয়েছে—বীর মুক্তিযোদ্ধা কোটা ৩টি, আদিবাসী কোটা ১টি, প্রতিবন্ধী কোটা ১টি এবং পোষ্য কোটা ৩টি।
বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ পরীক্ষার্থীদের সময়মতো কেন্দ্রে পৌঁছাতে এবং সঠিকভাবে নির্দেশনা অনুসরণ করতে আহ্বান জানিয়েছে। দীর্ঘ আট বছর পর সরাসরি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হওয়ায় শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের মধ্যে ব্যাপক আগ্রহ ও উত্তেজনা বিরাজ করছে।