পোল্যান্ডে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন ঘিরে অভিবাসন নিয়ে ভুয়া তথ্যের ছড়াছড়ি

Presidential election in Poland

পোল্যান্ডে আসন্ন প্রেসিডেন্ট নির্বাচন ঘিরে অভিবাসন ইস্যুকে ঘিরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়ানো হচ্ছে বিভ্রান্তিকর ও ভুল তথ্য। ডানপন্থি ও কট্টর ডানপন্থি রাজনীতিকেরা এই ইস্যুতে বিদেশিদের বিরুদ্ধে জনমত গড়তে অপপ্রচারে মেতে উঠেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।

আগামী ১৮ মে অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া নির্বাচনের প্রচার কার্যক্রমের শেষ পর্যায়ে অভিবাসন হয়ে উঠেছে সবচেয়ে আলোচিত বিষয়গুলোর একটি।

জাতীয়তাবাদী ‘ল অ্যান্ড জাস্টিস’ (পিআইএস) পার্টির প্রার্থী ক্যারল নাভরকি এবং কট্টর ডানপন্থি কনফেডারেশন পার্টির প্রার্থী স্লাভোমির মেন্তজেন জনপ্রিয়তায় ইউরোপপন্থি ওয়ারশোর বর্তমান মেয়র রাফাল চাস্কোভস্কি-এর চেয়ে পিছিয়ে আছেন। তবে জনপ্রিয়তা বাড়াতে তারা অভিবাসীদের ঘিরে ভুয়া ভিডিও ও বিকৃত ছবি ছড়িয়ে জনগণকে প্রভাবিত করার চেষ্টা করছেন।

একটি আলোচিত ভিডিওতে দাবি করা হয়, জার্মান পুলিশ পোল্যান্ড সীমান্ত থেকে এক অভিবাসীকে ফেরত পাঠাচ্ছে। অথচ পরে জানা যায়, সেই ব্যক্তি একজন পোলিশ গৃহহীন। একইভাবে ওয়ারশোর রাস্তায় প্রার্থনারত একদল অভিবাসীর ভিডিও ছড়ানো হলেও সেটি আসলে ইতালিতে ধারণকৃত।

ওয়ারশো বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক মার্তা কিন্ডলার জানান, পোল্যান্ডে মূলত ফিলিপাইন, ভারত, নেপাল ও কলম্বিয়া থেকে আগত অভিবাসীরাই বেশি, আফ্রিকার অভিবাসীর সংখ্যা কম।

তিনি আরও বলেন, জার্মানি থেকে ‘১০ হাজার অভিবাসী ফেরত পাঠানো’র দাবিও ভুয়া। এই সংখ্যা মূলত ইউক্রেনীয় নাগরিকদের নিয়ে, যাদের বৈধ কাগজ না থাকায় জার্মানিতে ঢুকতে বাধা দেওয়া হয়।

এছাড়া ২০২৪ সালের মে মাসে বেলারুশ সীমান্তে আবার চালু করা হয় ২০০ মিটারের ‘বাফার জোন’। জুলাইয়ে সীমান্তরক্ষীদের গুলি চালানোর অনুমতি দেওয়া হয় “আত্মরক্ষার ক্ষেত্রে”। মার্চে পাস হয় এক আইন, যেখানে অভিবাসন সুরক্ষা আবেদন সাময়িকভাবে স্থগিত রাখার সুযোগ রাখা হয়।

এর প্রেক্ষিতে এপ্রিল মাসে সরকার সাতটি দেশের নাগরিকদের উদ্দেশ্যে একটি প্রচার অভিযান চালায়, যাতে পোল্যান্ডে না আসার বিষয়ে সতর্কবার্তা দেওয়া হয়।

প্রধানমন্ত্রী ডোনাল্ড টুস্ক বলেন, “সীমান্ত বন্ধ। দালালদের বিশ্বাস করবেন না। লুকাশেঙ্কো ও পুটিন মিথ্যা বলছেন। এখানে এসে কেউ আর আশ্রয় চাইতে পারবে না।”

এদিকে, বিভিন্ন ডানপন্থি দল আগামী ১০ মে ওয়ারশোতে অভিবাসনবিরোধী বিক্ষোভের ডাক দিয়েছে। রাজনৈতিক বিশ্লেষক কাতারজিনা বাকোভিচ বলেন, “এই প্রচারণার মূল উদ্দেশ্য জনমনে ভয় সৃষ্টি করা। বিভ্রান্তি তৈরি করে সেটিকে হাতিয়ার করে জনপ্রিয়তা অর্জন করার কৌশল নেওয়া হয়েছে।”