পিএসপি বৃহস্পতিবার লিসবনের রুয়া ডো বেনফর্মোসো এবং মার্টিম মনিজ এলাকায় একটি “বিশেষ অপরাধ প্রতিরোধ অভিযান” চালায় । সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করা ছবি এবং মিডিয়ার রিপোর্ট অনুসারে, কয়েক ডজন অভিবাসী নাগরিককে আবারও দেয়ালের বিপরীতে দাঁড়িয়ে ইউনিফর্ম ও সাদা পোশাকের অফিসারদের দ্বারা তল্লাশি করতে দেখা গেছে।
পুলিশের অভিযানে অতিরিক্ত শক্তি ব্যবহারের অভিযোগ তুলেছেন স্থানীয় বাংলাদেশি অভিবাসীরা। অভিযানের পদ্ধতিকে “অগ্রহণযোগ্য” আখ্যা দিয়ে বলছেন যে, এই অভিযান অভিবাসীদের প্রতি নেতিবাচক ধারণা সৃষ্টি করছে। অভিযানের সময় তোলা ছবি এবং ভিডিও সামাজিক মাধ্যমে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়েছে। এতে দেখা যায়, অভিবাসীদের দেওয়ালের দিকে মুখ করে দাঁড় করানো হয়েছে, যা নিয়ে তীব্র বিতর্ক শুরু হয়েছে।
বৃহস্পতিবার পরিচালিত এ অভিযানে অনেক অভিবাসীকে দেওয়ালের দিকে ঠেসে দাঁড় করিয়ে তল্লাশি করা হয়। মানুষকে এমনভাবে দাঁড় করানো হয়েছে, যেন তারা অপরাধী। তল্লাশির সময় যাদের দেহ পরীক্ষা করা হয়েছিল, তারা সবাই বৈধ অভিবাসী ছিলেন । সাধারণ একটি দিনে তারা চা খেতে বা মুদি দোকানে যাচ্ছিলেন, যেমনটা পর্তুগালের অন্য নাগরিকরা করেন। এ ধরনের কর্মকাণ্ড পর্তুগালে বর্ণবাদ এবং বিদেশি-বিদ্বেষ বাড়াবে।
অভিবাসীরা অভিযানের পদ্ধতি নিয়ে সমালোচনা করে বলছেন কেউ কেউ বলছেন যে যদি অবৈধ অভিবাসী, মাফিয়া বা মাদকের সন্ধান করতে হয়, তবে এর জন্য আরও গ্রহণযোগ্য এবং সঠিক পদ্ধতি অনুসরণ করতে হবে। আমরা কখনোই এ ধরনের অভিযান মেনে নেব না।
সান্তা মারিয়া মেয়র পারিশ কাউন্সিলের প্রেসিডেন্ট মিগেল কোয়েলোও অভিযানের সমালোচনা করেছেন। তিনি বলেন, “যা ঘটেছে, তা একটি স্বৈরতান্ত্রিক ব্যবস্থার উদাহরণ মনে হয়।”
সান্তা মারিয়া মায়োর প্যারিশ কাউন্সিলের সভাপতি মিগুয়েল কোয়েলহো, যিনি অভ্যন্তরীণ প্রশাসনের মন্ত্রীর পদত্যাগের আহ্বান জানিয়েছিলেন, তিনিও এই অভিযানের সমালোচনা করেছেন।
“গতকাল যা ঘটেছে [বৃহস্পতিবার], তা একটি ইসলামিক স্বৈরতন্ত্র বা লাতিন আমেরিকান স্বৈরতন্ত্রের উদাহরণ মনে হয় […], আমি একজন নাগরিক এবং একজন মেয়র হিসেবে বিশ্বাস করি যে অভ্যন্তরীণ প্রশাসন মন্ত্রীকে আর দায়িত্বে থাকার কোনো অধিকার নেই এবং পুলিশ কমান্ডকে ব্যাখ্যা করতে হবে কেন তারা পুরো একটি রাস্তা বন্ধ করে মানুষকে দেওয়ালের দিকে ঠেলে দাঁড় করিয়েছে। তারা কি ক্যাম্পো দে আওরিক, অ্যাভেনিদাস নোভাস বা লুমিয়ার এলাকায় এ ধরনের কাজ করতে পারত?” তিনি প্রশ্ন তোলেন।
রুয়া ডো বেনফর্মোসোতে এলাকায় পরিচালিত এই অভিযানের সময় দুইজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাদের কাছ থেকে প্রায় ৪,০০০ ইউরো নগদ অর্থ, অস্ত্র, মাদক এবং বেশ কিছু ভুয়া সামগ্রী জব্দ করা হয়।
লিসবন মেট্রোপলিটন পুলিশ (কমেটলিস) জানিয়েছে, একজনকে নিষিদ্ধ অস্ত্র ও মাদক রাখার দায়ে এবং অন্যজনকে আটটি ডাকাতির অভিযোগে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। অভিযানে ছয়টি তল্লাশি ওয়ারেন্ট কার্যকর করা হয়েছে।