পর্তুগালে ২০ দিনের মধ্যে ৪,৫০০ অভিবাসীকে দেশত্যাগের নোটিশ: আতঙ্কে প্রবাসীরা

face deportation portugal

পর্তুগালে অবস্থানরত প্রায় ৪,৫০০ অভিবাসীকে ২০ দিনের মধ্যে দেশত্যাগের নির্দেশ দেওয়া হতে পারে, এমন খবর প্রকাশিত হওয়ার পর প্রবাসী মহলে চরম উদ্বেগ ও আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। আশঙ্কা করা হচ্ছে, এই সংখ্যা ১৮,০০০ পর্যন্ত পৌঁছাতে পারে। পর্তুগালের প্রেসিডেন্সি মন্ত্রী আন্তোনিও লেতো আমারাল বা আইএমএফ প্রধানমন্ত্রীর বরাত দিয়ে এই তথ্য সংবাদ মাধ্যমে উঠে এসেছে।

এই সংবাদটি শনিবার সকাল ১১টার দিকে প্রকাশিত হতেই মুহূর্তের মধ্যেই ভাইরাল হয়ে পড়ে। প্রথমে বিষয়টিকে গুজব হিসেবে ধরা হলেও পরে অনেকের মেসেজ এবং প্রতিক্রিয়ার পর জানা যায় যে এটি একটি বাস্তব সমস্যা এবং এর প্রভাব পড়ছে হাজার হাজার অভিবাসীর ওপর। বর্তমানে ১,১০,০০০-এর বেশি ফাইল প্রসেসিংয়ে রয়েছে, যার মধ্যে অনেকেই এখন আতঙ্কিত যে তাদের ২০ দিনের মধ্যে দেশ ছাড়তে হতে পারে।

এই পরিস্থিতিতে একজন প্রবাসী সমাজকর্মী জানান, “আমি হাজার হাজার মেসেজ পেয়েছি, অনেকে বলছেন আমরা ফোনও ধরছি না। আমি সবার প্রশ্নের উত্তর দিতে না পারলেও চেষ্টা করছি সবার সন্দেহ দূর করতে। অনেকেই জানতে চেয়েছেন, আসলেই কি এত বড় পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে?”

তিনি আরো জানান, “যারা শেঞ্জেন জোনে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা পেয়েছেন বা পুলিশ ক্লিয়ারেন্সে সমস্যা আছে, তাদের ক্ষেত্রে কিছু সিদ্ধান্ত হয়েছে। তবে যেসব প্রবাসীরা পর্তুগালে বৈধভাবে অবস্থান করছেন, কাজ করছেন, তাদের দায় নেই।”

অনেক প্রবাসীর অভিযোগ, তারা ফ্রান্স বা অন্যান্য দেশের সীমান্তে বায়োমেট্রিক দিয়েছেন, কিন্তু পরে পর্তুগালে এসে সেফ এন্ট্রি, পুলিশ ক্লিয়ারেন্স, চাকরির চুক্তিপত্রসহ সকল বৈধ কাগজপত্র জমা দিয়ে কাজ করছেন। তাদেরকে এখন হঠাৎ বলা হচ্ছে তারা অবৈধ! অথচ, সেফ সার্টিফিকেট দিয়ে পর্তুগালে বৈধতার স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছিল তাদের।

প্রবাসীরা মনে করছেন, এটি একটি রাজনৈতিক কৌশল। পর্তুগালের সংসদের বিভিন্ন রাজনৈতিক দল — সোশালিস্ট পার্টি, ব্লোক দে এসকের্দা, লিব্রে, পিএএন — সরকারকে অভিবাসীবিরোধী প্রচারণার জন্য কঠোর সমালোচনা করেছে।

একজন অভিবাসী বলেন, “আমি অপরাধী হতে চাই না। আমি এখানে বৈধভাবে কাজ করছি। এখন যদি প্রশাসনিক আদালতে যেতে হয়, আমি যাবো। কিন্তু আমাদেরকে অন্যায়ভাবে তাড়িয়ে দেওয়া হলে তা আমরা মেনে নেব না।”

এই পরিস্থিতিতে প্রবাসীদের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধি, তথ্য যাচাই এবং আইনি সহায়তা নেওয়ার জন্য আহ্বান জানানো হয়েছে। অনেকে পরামর্শ দিচ্ছেন, অপ্রমাণিত খবর দেখে আতঙ্কিত না হয়ে, সম্পূর্ণ সাক্ষাৎকার বা বক্তব্য শুনে সিদ্ধান্ত নিতে।