পর্তুগালে বিরল এক আবহাওয়া পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় দেশজুড়ে এবং আশপাশের সমুদ্র অঞ্চলে মোট ৪৭ হাজার ৬৭৬টি বজ্রপাত (Atmospheric Electrical Discharges – AEDs) রেকর্ড করা হয়েছে বলে জানিয়েছে IPMA (Instituto Português do Mar e da Atmosfera)।
শুক্রবার স্থানীয় সময় দুপুর ১টার প্রতিবেদন অনুযায়ী, এ তথ্য প্রকাশ করে সংস্থাটি। IPMA’র আবহাওয়াবিদ পেদ্রো সাউসা (Pedro Sousa) বলেন, “এটি এক ধরনের ব্যতিক্রমী ঘটনা। এতো বেশি মাত্রার বজ্রপাত প্রতি বছর ঘটে না।”
তিনি আরও জানান, “এটি একটি ফ্রন্টাল সিস্টেমের কারণে হয়েছে, যা সাধারণত এই সময়ে দেখা যায়, তবে এবার এর অস্থিরতা সূচক (instability indices) অনেক বেশি ছিল। ফলে বজ্রঝড়ের সম্ভাবনা অন্যান্য বছরের তুলনায় অনেক বেশি ছিল।”
সংস্থাটির তথ্য অনুযায়ী, মূল ভূখণ্ড পর্তুগাল বর্তমানে মাঝারি থেকে শক্তিশালী একটি ঠান্ডা ফ্রন্টের প্রভাবে রয়েছে, যার কারণে বৃষ্টি, বজ্রঝড় ও প্রবল বাতাস দেখা দিচ্ছে।
এদিকে, পর্তুগালের সব জেলা (Bragança বাদে)-তে বজ্রঝড়ের জন্য হলুদ সতর্কতা (Yellow Alert) জারি করেছে IPMA।
অন্যদিকে, জাতীয় জরুরি ও নাগরিক সুরক্ষা কর্তৃপক্ষ (ANEPC) জানিয়েছে, শুক্রবার ভোর থেকে দুপুর পর্যন্ত মাত্র ১২ ঘণ্টায় ৭৮৪টি দুর্ঘটনা ও ক্ষয়ক্ষতির ঘটনা নথিভুক্ত হয়েছে।
এর মধ্যে রয়েছে —
- ৪৩৫টি জলাবদ্ধতা,
- ১৬৩টি গাছ উপড়ে পড়া,
- ৭৭টি সড়ক পরিষ্কার অভিযান,
- ৭৬টি ভবন ধস বা ক্ষতি,
- ৩১টি ভূমিধস বা পাথর গড়িয়ে পড়ার ঘটনা,
এছাড়াও একটি পানিতে উদ্ধারের ঘটনা ঘটেছে।
সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত অঞ্চল হলো লিসবন ও তেজো ভ্যালি (Lisbon and Tagus Valley), যেখানে ৪০৯টি ঘটনার রেকর্ড পাওয়া গেছে। পরবর্তীতে কেন্দ্রীয় অঞ্চল (১৯১টি), উত্তর অঞ্চল (১৩২টি), ও আলেন্তেজো (৫২টি) ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এ ধরনের বজ্রপাত পর্তুগালে “প্রতি বছর দেখা যায় না”— এটি এক ধরনের ব্যতিক্রমী আবহাওয়া ঘটনা, যা জলবায়ু পরিবর্তনের সঙ্গে সম্পর্কিত হতে পারে।
