অবৈধ অভিবাসীদের ফেরত পাঠাতে নতুন আইন অনুমোদন করল পর্তুগাল সরকার

portugal new law illegal immigration

পর্তুগালে অবৈধভাবে অবস্থানরত বিদেশিদের ফেরত পাঠানোর জন্য নতুন আইন অনুমোদন করেছে দেশটির সরকার। বৃহস্পতিবার মন্ত্রিপরিষদের বৈঠক শেষে এক সংবাদ সম্মেলনে আইনটিকে “অভিবাসন নীতির সংস্কারের শেষ বড় পদক্ষেপ” হিসেবে উল্লেখ করেন মন্ত্রিপরিষদ বিষয়ক মন্ত্রী আন্তোনিও লেইতাঁও আমারো।

তিনি বলেন, “আজ যে আইনটি আমরা অনুমোদন করেছি, তা কোনও সাধারণ মানুষের বিরুদ্ধে নয়; বরং তাদের প্রতি যারা নিয়ম ভঙ্গ করে অবৈধভাবে পর্তুগালে প্রবেশ করেছে এবং অবস্থান করছে।”

মন্ত্রী জানান, SEF (Immigration and Borders Service) বিলুপ্তির পর দেশটিতে জটিলতা, বিলম্ব এবং অপব্যবহারের ঘটনা বেড়ে যায়। এই পরিস্থিতি ঠিক করার লক্ষ্যেই আনা হয়েছে নতুন আইন।

তার ভাষায়, ২০২৩ সালে পর্তুগালে অবৈধ অবস্থানকারীদের ফেরত পাঠানোর হার ইউরোপের মধ্যে সবচেয়ে কম ছিল—মাত্র ৫ শতাংশের নিচে। এটি ছিল ভুল বার্তা, যা মানুষকে মনে করিয়েছে আইন না মানলেও সমস্যা নেই।

আন্তোনিও লেইতাঁও আমারো জানান, নতুন আইনটি মানবাধিকার সুরক্ষার নীতিমালা মেনে তৈরি করা হয়েছে। এখানে রাখা হয়েছে—

  • আত্মপক্ষ সমর্থনের অধিকার
  • আপিলের সুযোগ
  • আইনি সহায়তার নিশ্চয়তা
  • শিশু ও দুর্বল ব্যক্তিদের বিশেষ সুরক্ষা
  • নির্যাতন বা ঝুঁকিপূর্ণ দেশে কাউকে ফেরত না পাঠানোর নীতি

মন্ত্রী বলেন, “এটি একটি ভারসাম্যপূর্ণ আইন, যা নিয়ম-কানুনকে শক্তিশালী করার পাশাপাশি মানবাধিকারকেও সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেয়।”

নতুন আইনে জোর দেওয়া হয়েছে—দ্রুত সিদ্ধান্ত গ্রহণ প্রক্রিয়া, আশ্রয়প্রার্থীর নিয়মের অপব্যবহার বন্ধ, অযৌক্তিক বিলম্ব কৌশলের অবসান, PSP-এর বিদেশি ও সীমান্ত ইউনিটে ক্ষমতা কেন্দ্রীকরণ

এছাড়াও, ইউরোপের কিছু দেশে ব্যবহৃত ওপেন-রেজিম ডিটেনশনসহ বিকল্প ব্যবস্থাও বিবেচনায় আনা হয়েছে।

আইনটি এখন এক মাসব্যাপী জনমতের জন্য উন্মুক্ত করা হবে। দুই সপ্তাহের মধ্যে মাইগ্রেশন অ্যান্ড অ্যাসাইলাম বিষয়ক জাতীয় পরিষদের বৈঠকও আহ্বান করা হবে। পরে এটি সংসদে অনুমোদনের জন্য পাঠানো হবে।

মন্ত্রী স্মরণ করিয়ে দেন, গত দেড় বছরে পর্তুগালে অভিবাসন নীতিতে বড় ধরনের পরিবর্তন আনা হয়েছে—অভিব্যক্তি-অফ-ইন্টারেস্ট (Expression of Interest) বাতিল, নতুন বিদেশি আইন ও নাগরিকত্ব আইন, PSP-তে নতুন সীমান্ত ইউনিট, হাজারো আটকে থাকা ফাইল নিষ্পত্তি

তার মতে, “পর্তুগাল এখন আর নিয়ন্ত্রণহীন অভিবাসন নীতির দেশ নয়; বরং নিয়ম-শৃঙ্খলা ও মানবিক নীতিতে পরিচালিত একটি পরিপূর্ণ অভিবাসন ব্যবস্থা গড়ে উঠেছে।”