পর্তুগালে ‘This is not Bangladesh’ পোস্টার ঘিরে তোলপাড়, বিক্ষোভ প্রবাসী বাংলাদেশিদের

isto nao eo bangladesh

পর্তুগালের মন্তিজো (Montijo) শহরের একটি বাসস্টপের পাশে ঝুলানো একটি রাজনৈতিক বিলবোর্ডকে ঘিরে তীব্র সমালোচনার ঝড় উঠেছে স্থানীয় ও প্রবাসী মহলে। বিলবোর্ডটিতে দেশটির ডানপন্থী রাজনৈতিক দল ‘শেগা’ (Chega)-এর নেতা আন্দ্রে ভেনচুরার ছবি ব্যবহার করে বড় অক্ষরে লেখা হয়েছে—
“Isto não é Bangladesh”
বাংলায় যার অর্থ— “এটা বাংলাদেশ নয়।”

এই পোস্টারটি ঘিরে পর্তুগালে বসবাসরত প্রবাসী বাংলাদেশিরা তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন এবং একে বাংলাদেশকে অপমানজনকভাবে কটাক্ষ করা রাজনৈতিক প্রচারণা বলে মন্তব্য করেছেন।

আন্দ্রে ভেনচুরা বর্তমানে পর্তুগালের প্রধান বিরোধী দল ‘শেগা’র রক্ষণশীল নেতা। আসন্ন ২০২৬ সালের জানুয়ারির রাষ্ট্রপতি নির্বাচনকে সামনে রেখে তার দল অভিবাসনবিরোধী অবস্থানকে প্রচারের মূল বার্তা হিসেবে ব্যবহার করছে।

সেই প্রচারণার অংশ হিসেবেই দলটি “Isto não é Bangladesh” বা “This is not Bangladesh” স্লোগানকে তাদের নির্বাচনী বার্তা হিসেবে সামনে এনেছে, যা মূলত অভিবাসী ও বিশেষ করে দক্ষিণ এশীয় শ্রমিকদের প্রতি নেতিবাচক মনোভাব তৈরির প্রচেষ্টা বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, এই স্লোগানটি অভিবাসনবিরোধী রাজনীতিকে উসকে দিতে এবং বাংলাদেশি শ্রমিকদের লক্ষ্যবস্তু বানাতে ব্যবহার করা হচ্ছে। এতে পর্তুগালের বহুদিনের সহনশীল সমাজব্যবস্থা ও আন্তর্জাতিক ভাবমূর্তি ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে।

স্থানীয় বাংলাদেশি কমিউনিটি এই ঘটনাকে “বর্ণবাদী রাজনীতির চূড়ান্ত উদাহরণ” বলে আখ্যা দিয়েছে।

পর্তুগাল বাংলাদেশ কমিউনিটির প্রতিনিধিত্বকারী সংগঠন ‘কাজা দো বাংলাদেশ’ এর সাধারণ সম্পাদক শহীদ আহমদ (প্রিন্স) বলেন,

“আন্দ্রে ভেনচুরা একজন বর্ণবাদী নেতা। এই বিলবোর্ড আমাদের কমিউনিটিতে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি করেছে। বিষয়টি এখন বাংলাদেশ দূতাবাস ও সরকারের নজরে এসেছে। আমরা চাই, এর একটি কূটনৈতিক সমাধান হোক।”

বিলবোর্ডটির ছবি সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ার পর পর্তুগিজ নাগরিকদের মধ্যেও মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে। কেউ কেউ একে “অভিবাসনবিরোধী বাস্তবতার প্রতিচ্ছবি” বলে সমর্থন করলেও, অনেকেই একে বিদ্বেষমূলক ও লজ্জাজনক রাজনৈতিক কৌশল হিসেবে নিন্দা জানিয়েছেন।

এর আগে দেশটিতে চেগা দলের উত্থান ও অভিবাসনবিরোধী বক্তব্যের কারণে অভিবাসী সমাজে আতঙ্ক ছড়িয়েছে। বিশ্লেষকরা সতর্ক করেছেন, এই প্রবণতা অব্যাহত থাকলে পর্তুগালের ঐতিহ্যবাহী সহনশীল সমাজব্যবস্থা হুমকির মুখে পড়তে পারে।