দেশের সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রায় ৩০ হাজার প্রধান শিক্ষকের জন্য সুখবর দিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার। তাদের দীর্ঘদিনের দাবি অনুযায়ী ১০ম গ্রেডে বেতনস্কেল উন্নীত করার বিষয়টি সক্রিয়ভাবে বিবেচনাধীন রয়েছে বলে জানিয়েছে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর।
গতকাল (৫ জুলাই) অধিদপ্তরের পরিচালক (পলিসি ও অপারেশন) মোহাম্মদ কামরুল হাসান স্বাক্ষরিত এক অফিস আদেশে বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়। এতে বলা হয়, রিট পিটিশন নম্বর ৩২১৪/২০১৮ অনুসারে হাইকোর্ট বিভাগের রায়ের ভিত্তিতে ৪৫ জন রিটকারী প্রধান শিক্ষকের বেতনস্কেল ১১তম থেকে ১০ম গ্রেডে উন্নীত করে অর্থ মন্ত্রণালয় সম্মতি দিয়েছে। বাকি প্রধান শিক্ষকদের ক্ষেত্রেও বিষয়টি সরকারের সক্রিয় বিবেচনায় রয়েছে।
বাংলাদেশ প্রাথমিক শিক্ষক সমিতি সরকারের এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছে। সমিতির সভাপতি মো. আবুল কাশেম বলেন, “এতে ৩০ হাজার প্রধান শিক্ষকের জন্য দশম গ্রেডের বাস্তবায়ন পথ সুগম হবে। যদিও শুধুমাত্র রিটকারী ৪৫ জনের বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়েছে, আমরা আশা করি শিগগিরই দেশের সব প্রধান শিক্ষক এই সুবিধার আওতায় আসবেন।”
প্রসঙ্গত, ২০১৪ সালের ৯ মার্চ আওয়ামী লীগ সরকার প্রধান শিক্ষকদের দ্বিতীয় শ্রেণির মর্যাদা দেওয়ার ঘোষণা দিলেও পরে বৈষম্যমূলকভাবে প্রশিক্ষিতদের ১১তম ও অপ্রশিক্ষিতদের ১২তম গ্রেড নির্ধারণ করে। এর প্রতিবাদে তৎকালীন প্রধান শিক্ষক রিয়াজ পারভেজসহ ৪৫ জন হাইকোর্টে রিট করেন। আদালত ২০১৯ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি রায়ে তাদের ১০ম গ্রেডে উন্নীত করার নির্দেশ দেন এবং সরকার পক্ষের আপিলও পরে খারিজ হয়।
এদিকে চাঁদাবাজির অভিযোগে সতর্ক করেছে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর। আদেশে বলা হয়, কিছু স্বার্থান্বেষী মহল এই প্রক্রিয়াকে কেন্দ্র করে প্রধান শিক্ষকদের কাছ থেকে অর্থ আদায়ের চেষ্টা করছে, যা ফৌজদারি অপরাধ। এ ধরনের চাঁদাবাজদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য থানায় সোপর্দ করার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
পরিচালক মোহাম্মদ কামরুল হাসান বলেন, “প্রধান শিক্ষকদের ১০ম গ্রেডে উন্নীত করতে সরকারের কোনো অতিরিক্ত অর্থনৈতিক দায় নেই। বিষয়টি ইতিবাচক দৃষ্টিকোণ থেকে বিবেচিত হচ্ছে। অর্থ মন্ত্রণালয়ের চূড়ান্ত অনুমোদনের পর প্রজ্ঞাপন জারি হবে, তবে এতে কিছুটা সময় লাগতে পারে।”