পূর্বাচল নতুন শহর প্রকল্পে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) প্লট বরাদ্দে দুর্নীতির মামলায় ব্রিটিশ এমপি টিউলিপ সিদ্দিক, ক্ষমতাচ্যুত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং তাঁর বোন শেখ রেহানাকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। আজ সোমবার বেলা ১১টায় ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৪ এর বিচারক মো. রবিউল আলম এই রায় ঘোষণা করেন।
রায়ে শেখ হাসিনাকে ৫ বছরের, শেখ রেহানাকে ৭ বছরের এবং লেবার পার্টির ব্রিটিশ এমপি টিউলিপ সিদ্দিককে ২ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
কারাদণ্ডের পাশাপাশি টিউলিপ সিদ্দিককে ১ লাখ টাকা জরিমানা, অনাদায়ে ৬ মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড এবং শেখ রেহানাকে ১ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে।
১৪ জনকে ৫ বছর করে কারাদণ্ড
একই মামলার অন্য ১৪ সরকারি কর্মকর্তা ও সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিকে ৫ বছর করে সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। তারা হলেন—
জাতীয় গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের প্রশাসনিক কর্মকর্তা মো. সাইফুল ইসলাম সরকার, সিনিয়র সহকারী সচিব পূরবী গোলদার, অতিরিক্ত সচিব অলিউল্লাহ, সচিব কাজী ওয়াছি উদ্দিন, রাজউকের সাবেক চেয়ারম্যানের পিএ মো. আনিছুর রহমান মিঞা, সাবেক চার সদস্য—মোহাম্মদ খুরশীদ আলম, তন্ময় দাস, মোহাম্মদ নাসির উদ্দীন ও মেজর (অব.) সামসুদ্দীন আহমদ চৌধুরী; রাজউকের সাবেক পরিচালক মো. নুরুল ইসলাম, সহকারী পরিচালক মাজহারুল ইসলাম, উপপরিচালক নায়েব আলী শরীফ, সাবেক প্রধানমন্ত্রীর একান্ত সচিব মোহাম্মদ সালাহ উদ্দিন এবং সাবেক প্রতিমন্ত্রী শরীফ আহমেদ।
১৭ আসামির মধ্যে মোহাম্মদ খুরশীদ আলম ইতিমধ্যে কারাগারে আছেন বলে আদালত জানিয়েছে।
দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) ২০২৪ সালের ১৩ জানুয়ারি মামলাটি দায়ের করে। অভিযোগ ছিল— যুক্তরাজ্যের এমপি হিসেবে টিউলিপ সিদ্দিক নিজের রাজনৈতিক প্রভাব ব্যবহার করে মা শেখ রেহানা, বোন আজমিনা সিদ্দিক এবং ভাই রাদওয়ান মুজিবের নামে পূর্বাচল নতুন শহর প্রকল্পে প্লট বরাদ্দ নেন।
তবে মামলার চার্জশিটে শুধুমাত্র শেখ রেহানার প্লট–সংক্রান্ত তথ্য অন্তর্ভুক্ত থাকায় আজমিনা সিদ্দিক ও রাদওয়ান মুজিবকে এই মামলার আসামি করা হয়নি। দুদক জানিয়েছে, তাদের বিরুদ্ধে পৃথক দুটি মামলা চলছে।
জুলাই মাসে গণ-অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর শেখ হাসিনা ও তাঁর পরিবারের বিরুদ্ধে একাধিক দুর্নীতির অভিযোগ তদন্ত শুরু করে দুদক। তদন্তের সময় টিউলিপ সিদ্দিকের নামও উঠে আসে। সমালোচনার মুখে তিনি ১৪ জানুয়ারি যুক্তরাজ্যের অর্থনীতিবিষয়ক মিনিস্টারের (ইকোনমিক সেক্রেটারি টু দ্য ট্রেজারি) পদ থেকে পদত্যাগ করেন।
