বিধ্বস্ত যুদ্ধবিমানে প্রাণ হারানো শিশু রাইসাকে গ্রামবাসীর চোখের জলে বিদায়

Milestone raisa moni janaza alfadanga

রাজধানীর উত্তরায় মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে যুদ্ধবিমান বিধ্বস্তের মর্মান্তিক ঘটনায় নিহত শিশু রাইসা মনিকে (৯) ফরিদপুরের নিজ গ্রামে গ্রামবাসীর চোখের জলে চিরবিদায় দেওয়া হয়েছে। শুক্রবার সকালে ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গা উপজেলার গোপালপুর ইউনিয়নের বাজড়া দক্ষিণ পাড়া ঈদগাহ ময়দানে জানাজা শেষে বাজড়া শামসুল উলুম মাদ্রাসা ও এতিমখানা কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়।

রাইসা উত্তরার মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের তৃতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থী ছিল। তার বাড়ি ফরিদপুরের বাজড়া গ্রামে। বাবা শাহাবুল শেখ এবং মা রাবেয়া খাতুন পরিবারের সঙ্গে রাজধানীর উত্তরার নয়ানগরে ভাড়া বাসায় বসবাস করতেন। তিন ভাইবোনের মধ্যে রাইসা ছিল মেজ।

বিধ্বস্ত যুদ্ধবিমানটির ধ্বংসস্তূপ থেকে দীর্ঘ সময় নিখোঁজ থাকার পর শিশুটির মৃতদেহ শনাক্ত করতে ডিএনএ পরীক্ষার প্রয়োজন হয়। পরে তার মুখাবয়বের একটি অংশ দেখে বাবার সন্দেহ হলে সিএমএইচ হাসপাতালে ডিএনএ নমুনা সংগ্রহ করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল। ডিএনএ পরীক্ষায় মিল পাওয়ার পর বৃহস্পতিবার রাতে পরিবারের কাছে লাশ হস্তান্তর করা হয়।

শুক্রবার ভোরে রাইসার মরদেহ গ্রামের বাড়িতে পৌঁছালে হৃদয়বিদারক দৃশ্যের সৃষ্টি হয়। আত্মীয়স্বজন, প্রতিবেশীসহ পুরো গ্রামজুড়ে নেমে আসে শোকের ছায়া। সকাল থেকেই চলতে থাকে কান্নার রোল। কেউ চোখের পানি ধরে রাখতে পারেননি।

রাইসার চাচা ইমদাদুল শেখ বলেন, “রাইসাকে আজ ভোররাতে বাড়িতে আনা হয়। সকাল ৯টা ১৫ মিনিটে জানাজা সম্পন্ন করে স্থানীয় কবরস্থানে দাফন করা হয়েছে।”

স্থানীয় ইউপি সদস্য ওবায়দুর রহমান জানান, “রাইসা মনির অকালমৃত্যুতে পুরো গ্রাম বাকরুদ্ধ। এমন করুণ মৃত্যু এর আগে আমাদের এলাকায় দেখা যায়নি। তার মরদেহ দেখে ছোট-বড় সবার চোখে জল এসে যায়।”

জানাজায় আলফাডাঙ্গা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রাসেল ইকবাল, সেনাবাহিনীর সদস্যসহ স্থানীয় এলাকাবাসী উপস্থিত ছিলেন। সকলে একসুরে বলেন, ছোট্ট রাইসার মৃত্যু শুধু একটি পরিবারের নয়, পুরো জাতির শোক।