রিজার্ভ বেড়ে প্রায় ২৭ বিলিয়ন ডলার

Reserves increase by about $27 billion

বাংলাদেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভে সুসংবাদ এসেছে। দেশের রিজার্ভ বেড়ে দাঁড়িয়েছে প্রায় ২৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলার, যা অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতার দিক থেকে একটি ইতিবাচক অগ্রগতি হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, ১৭ এপ্রিল পর্যন্ত দেশের গ্রস রিজার্ভের পরিমাণ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৬ দশমিক ৭৩ বিলিয়ন ডলার বা ২ হাজার ৬৭৩ কোটি ডলার। তবে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) হিসাব পদ্ধতি ব্যালান্স অব পেমেন্টস ম্যানুয়াল ৬ (বিপিএম-৬) অনুসারে বর্তমানে রিজার্ভ ২১ দশমিক ৩৯ বিলিয়ন ডলার, অর্থাৎ ২ হাজার ১৩৯ কোটি ডলার।

এর বাইরে বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভের আরেকটি হিসাব রয়েছে, যা শুধুমাত্র আইএমএফকে জানানো হয়ে থাকে। এই হিসাবে আইএমএফের এসডিআর খাতে থাকা ডলার, ব্যাংকগুলোর বৈদেশিক মুদ্রা ক্লিয়ারিং হিসাবে থাকা অর্থ এবং আকুর (এশিয়ান ক্লিয়ারিং ইউনিয়ন) বিল বাদ দিয়ে ব্যবহারযোগ্য বা ব্যয়যোগ্য রিজার্ভ হিসাব করা হয়। এই হিসাবে দেশের প্রকৃত রিজার্ভ এখন ১৬ বিলিয়ন ডলারের কাছাকাছি।

আন্তর্জাতিক মান অনুযায়ী, এক দেশের তিন মাসের আমদানি ব্যয়ের সমান পরিমাণ রিজার্ভ থাকা প্রয়োজন। বর্তমান পরিস্থিতিতে বাংলাদেশের রিজার্ভ দিয়ে তিন মাসেরও বেশি সময়ের আমদানি দায় মেটানো সম্ভব, যা অর্থনীতির জন্য একটি আশাব্যঞ্জক চিত্র তুলে ধরে। নিট রিজার্ভ গণনা করা হয় আইএমএফের ‘বিপিএম-৬’ পরিমাপ অনুসারে, যেখানে মোট রিজার্ভ থেকে স্বল্পমেয়াদি দায় বাদ দিয়ে প্রকৃত রিজার্ভ নির্ধারণ করা হয়।

রিজার্ভ বৃদ্ধির পেছনে সবচেয়ে বড় অবদান রেখেছে প্রবাসী আয় বা রেমিট্যান্স। চলতি মাসের প্রথম ১২ দিনেই দেশে এসেছে ১০৫ কোটি ২৪ লাখ ডলারের রেমিট্যান্স। শুধু তাই নয়, গত মার্চ মাসে রেমিট্যান্স আহরণে নতুন রেকর্ড গড়েছে দেশ। ওই মাসে এসেছে ৩ দশমিক ২৯ বিলিয়ন ডলার, যা দেশের ইতিহাসে এক মাসে সর্বোচ্চ রেমিট্যান্স আহরণের নজির।

বাংলাদেশ ব্যাংকের এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, “বর্তমান বৈশ্বিক অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তার মধ্যেও আমাদের রিজার্ভ বৃদ্ধির এই ধারা দেশের অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনার সফলতার একটি প্রতিফলন।”

অর্থনীতিবিদরা বলছেন, রিজার্ভে এই ইতিবাচক ধারা ধরে রাখতে হলে রেমিট্যান্স ও রপ্তানি আয় বৃদ্ধির পাশাপাশি আমদানি নিয়ন্ত্রণ এবং ডলার বাজারে স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে হবে। তাহলে দেশের সামষ্টিক অর্থনীতি আরও শক্তিশালী ভিত্তির উপর প্রতিষ্ঠিত হবে বলে তাদের আশা।