দেশে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভে বড় ধরনের বৃদ্ধি দেখা গেছে। নতুন করে রেমিট্যান্স প্রবাহ এবং আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) থেকে অর্থ ছাড়ের কারণে এই উত্থান হয়েছে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, ২৪ জুন পর্যন্ত দেশের মোট গ্রস রিজার্ভ দাঁড়িয়েছে ২৭ দশমিক ৩০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। বিপিএম৬ (Balance of Payments and International Investment Position Manual) অনুযায়ী এই রিজার্ভের পরিমাণ ২২ দশমিক ২৪ বিলিয়ন ডলার। যা পূর্ববর্তী সময়ের তুলনায় উল্লেখযোগ্য হারে বৃদ্ধি পেয়েছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র ও নির্বাহী পরিচালক আরিফ হোসেন খান মঙ্গলবার গণমাধ্যমকে এ তথ্য নিশ্চিত করেন। তিনি জানান, ২৩ জুন পর্যন্ত গ্রস রিজার্ভ ছিল ২৬ দশমিক ৮২ বিলিয়ন ডলার এবং বিপিএম৬ হিসাব অনুযায়ী তা ছিল ২১ দশমিক ৭৫ বিলিয়ন ডলার। তার আগে, ১৫ জুন পর্যন্ত গ্রস রিজার্ভ ছিল ২৬ দশমিক ১৫ বিলিয়ন ডলার এবং বিপিএম৬ অনুযায়ী ২০ দশমিক ৮৬ বিলিয়ন ডলার।
গত কয়েক সপ্তাহে রিজার্ভে যে ধারা লক্ষ্য করা যাচ্ছে, তা ইতিবাচক বলে মনে করছেন অর্থনৈতিক বিশ্লেষকরা। তাদের মতে, বৈদেশিক সাহায্য ও রেমিট্যান্স প্রবাহ বাড়ার ফলে রিজার্ভে এই প্রবৃদ্ধি এসেছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য মতে, ২০১৩ সালের জুন মাসে দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ছিল মাত্র ১৫ দশমিক ৩২ বিলিয়ন ডলার। এরপর ধাপে ধাপে তা বাড়তে থাকে। ২০১৮ সালে রিজার্ভ পৌঁছে ৩৩ দশমিক ৬৮ বিলিয়ন ডলারে, এবং ২০২০ সালের সেপ্টেম্বরে তা দাঁড়ায় ৩৯ বিলিয়ন ডলারে। একই বছরের অক্টোবরে রিজার্ভ প্রথমবারের মতো ৪০ বিলিয়নের মাইলফলক ছুঁয়ে ফেলে। ২০২১ সালের ২৪ আগস্ট রিজার্ভ সর্বোচ্চ ৪৮ দশমিক ০৪ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছায়।
তবে ২০২২ সালের পর থেকে রিজার্ভে ধস নামে। বৈশ্বিক অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তা, আমদানি ব্যয়ের চাপ এবং ডলার সংকটের কারণে রিজার্ভে লাগাতার পতন শুরু হয়।
বিশেষজ্ঞদের মতে, একটি দেশের অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতার জন্য ন্যূনতম তিন মাসের আমদানি ব্যয়ের সমপরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ থাকা প্রয়োজন। বাংলাদেশ এখনো সেই সীমার কাছাকাছি রয়েছে। তবে সাম্প্রতিক এই উত্থান অর্থনীতির জন্য একটি স্বস্তিদায়ক সংকেত বলেই মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।