রাকসু নির্বাচন পেছাল: শিবিরের বিক্ষোভ-ছাত্রদলের উল্লাস

RUCSU Election

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (রাকসু), হল সংসদ ও সিনেট ছাত্র প্রতিনিধি নির্বাচন পেছানোর সিদ্ধান্তকে ঘিরে ক্যাম্পাসে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়েছে। নির্বাচন পেছানোর প্রতিবাদে ইসলামী ছাত্রশিবির বিক্ষোভ করেছে, অন্যদিকে সিদ্ধান্তে স্বস্তি প্রকাশ করেছে ছাত্রদল, বাম সংগঠন মনোনীত প্যানেল এবং স্বতন্ত্র প্রার্থীরা।

আজ সোমবার সন্ধ্যায় এক বিজ্ঞপ্তিতে রাকসু নির্বাচন কমিশন জানায়, ২৫ সেপ্টেম্বরের পরিবর্তে আগামী ১৬ অক্টোবর নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। পোষ্য কোটা ইস্যুতে ক্যাম্পাসের পরিস্থিতি উত্তপ্ত হওয়ায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

প্রত্যক্ষদর্শীদের তথ্যমতে, বিকেল চারটায় কোষাধ্যক্ষের কার্যালয়ে নির্বাচন কমিশনের জরুরি সভা অনুষ্ঠিত হয়। সিদ্ধান্ত বিলম্বিত হওয়ায় সন্ধ্যা ৬টা ৩৫ মিনিটে ছাত্রশিবিরের নেতা-কর্মীরা কার্যালয়ের সামনে বিক্ষোভ শুরু করেন। অন্যদিকে “ভোটারবিহীন রাকসু চাই না” শ্লোগান তুলে বাম সংগঠন মনোনীত প্যানেল ও স্বতন্ত্র প্রার্থীরা পাল্টা অবস্থান নেন। পরে সন্ধ্যা ৭টা ৫ মিনিটের দিকে ছাত্রদলও বাম প্যানেলের সঙ্গে যোগ দেয়।

সন্ধ্যা সাড়ে সাতটায় প্রধান নির্বাচন কমিশনার অধ্যাপক এফ নজরুল ইসলাম স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে নির্বাচনের নতুন তারিখ ঘোষণা করা হয়।

এ খবর পেয়ে ছাত্রশিবির ক্ষোভে স্লোগান শুরু করে— “২৫ তারিখেই রাকসু দিতে হবে, দিতে হবে”, “সিন্ডিকেটের কালো হাত ভেঙে দাও, গুঁড়িয়ে দাও।” অন্যদিকে ছাত্রদল ও বামপন্থী প্যানেল উল্লাস প্রকাশ করে “ভুয়া, ভুয়া” শ্লোগান দেয়। পরে তারা রাকসু ভবনের সামনে চলে যায়, আর ছাত্রশিবির কোষাধ্যক্ষের কার্যালয়ের সামনে রাত পৌনে ৯টা পর্যন্ত অবস্থান করে বিক্ষোভ চালায়।

বিক্ষোভ সমাবেশে ইসলামী ছাত্রশিবিরের সভাপতি ও রাকসু ভিপি প্রার্থী মোস্তাকুর রহমান বলেন, “নির্বাচন কমিশন আস্থার জায়গা হারিয়েছে। বারবার নির্বাচন পেছানোর যে অপরাজনীতি চলছে, তা শিক্ষার্থীরা ৩৫ বছর ধরে দেখে বিরক্ত। আমরা ২৫ তারিখেই নির্বাচন চাই।”

বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের সভাপতি সুলতান আহমেদ বলেন, “ছাত্রশিবির একতরফাভাবে রাকসু নির্বাচন দখলের ষড়যন্ত্র করছিল। ছাত্রদলসহ সাধারণ শিক্ষার্থীরা তা প্রতিহত করেছে। শিক্ষার্থীদের বিজয় হয়েছে, আর জামায়াত-শিবিরের মিথ্যাচারের জবাব শিক্ষার্থীরা ব্যালটে দেবেন।”

ছাত্রশিবিরের বিক্ষোভের বিষয়ে প্রধান নির্বাচন কমিশনার অধ্যাপক এফ নজরুল ইসলাম জানান, “তারা মানছে না, কিন্তু মানতে হবে। ক্যাম্পাসের বর্তমান পরিস্থিতিতে এখন কোনোভাবেই নির্বাচন আয়োজন সম্ভব নয়।”