সাতক্ষীরার সদর উপজেলার বল্লী মুজিবুর রহমান মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে প্রবেশ করে এক সহকারী শিক্ষককে মারধর ও বাজারে ঘোরানোর ঘটনা ঘটেছে। রোববার (১৭ আগস্ট) সকাল ১০টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। ভুক্তভোগী শিক্ষক শফিকুর রহমান এ ঘটনায় থানায় লিখিত অভিযোগ করেছেন।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক কে এম আজাহারুজ্জামান জানান, স্থানীয় বিএনপি ও ছাত্রদলের কয়েকজন নেতা-কর্মী অভিযোগ করেন যে সহকারী শিক্ষক শফিকুর রহমান একজন ছাত্রীকে আলাদাভাবে বিদ্যালয়ে পড়িয়েছেন। এ অভিযোগকে কেন্দ্র করে তাঁকে অফিসকক্ষে মারধর করা হয়। পরে ১০ থেকে ১২ জন তাঁকে টেনে-হিঁচড়ে বাইরে নিয়ে গিয়ে বেধড়ক মারধর করে বাজারে ঘুরিয়ে বেড়ায়। একপর্যায়ে ইউনিয়ন পরিষদের ভেতরে তাঁকে আটকে রাখা হয়। পরে অন্যান্য শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা গিয়ে তাঁকে উদ্ধার করে বিদ্যালয়ে ফিরিয়ে আনেন।
এ ঘটনায় শিক্ষক শফিকুর রহমান সাতক্ষীরা সদর থানায় যে অভিযোগ করেছেন, তাতে স্থানীয় ছাত্রদল সদস্য শহিনুর রহমান, কর্মী কামরুজ্জামান, রবিউল ইসলাম, ইউপি বিএনপির সাবেক সভাপতি সেলিম আক্তার, বিএনপি কর্মী আব্দুল গনি, ইউপি সদস্য আব্দুর রইচ, ইসলাম কবিরাজ এবং বল্লী ইউনিয়ন ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক রাশেদুজ্জামানসহ আরও কয়েকজনের নাম উল্লেখ রয়েছে।
তবে এ অভিযোগ অস্বীকার করেছেন ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সভাপতি সেলিম আক্তার। তিনি দাবি করেন, “ঘটনাটি ছিল সামান্য ধাক্কাধাক্কি। এর আগেও ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে অনৈতিক কর্মকাণ্ডের অভিযোগ রয়েছে।” একইসঙ্গে ছাত্রদল নেতা রাশেদুজ্জামান জানান, তিনি ঘটনাস্থলে ছিলেন তবে উত্তেজিত জনতাকে থামাতে ব্যর্থ হয়েছেন।
সাতক্ষীরা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শামিনুল হক বলেন, “শিক্ষক শফিকুর রহমান অভিযোগ দিয়েছেন। তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
বিদ্যালয়ের সভাপতি ও সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শোয়াইব আহমাদ বলেন, “দুই পক্ষকে ডেকে বিষয়টি শুনেছি। শিক্ষক শফিকুর রহমানকে মামলা করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। শিক্ষকের বিরুদ্ধে যদি কোনো অপরাধের প্রমাণ পাওয়া যায়, তাহলে তদন্তসাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”