ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অগ্রণী ব্যাংকে থাকা দুটি লকার খুলে ৮৩২ ভরি সোনার গয়না উদ্ধার করেছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সেল (সিআইসি)। আদালতের অনুমতি নিয়ে মঙ্গলবার একজন ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে লকার দুটি খোলা হয়। বিষয়টি নিশ্চিত করেছে এনবিআরের দায়িত্বশীল এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা।
সূত্র জানায়, লকার খোলার সময় এনবিআর–এর সিআইসি, দুদক, বাংলাদেশ ব্যাংক ও সংশ্লিষ্ট সংস্থার কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
রাজধানীর দিলকুশায় অগ্রণী ব্যাংকের প্রধান শাখায় অবস্থিত লকার দুটি গত সেপ্টেম্বর সিআইসি জব্দ করে—শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে সম্পদ গোপন, কর ফাঁকি ও অবৈধ সম্পদ অনুসন্ধানের অংশ হিসেবে।
সিআইসির এক শীর্ষ কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন,
“আদালতের অনুমতি ও বাংলাদেশ ব্যাংকের নিয়ম মেনে লকার দুটি খোলা হয়েছে। সেখানে ৮৩২ ভরি সোনার গয়না পাওয়া গেছে। এগুলো তাঁর আয়কর রিটার্নের সম্পদ বিবরণীর সঙ্গে মিলিয়ে দেখা হবে।”
এর এক সপ্তাহ আগে, ১০ সেপ্টেম্বর, পূবালী ব্যাংকের মতিঝিল করপোরেট শাখায় থাকা শেখ হাসিনার আরেকটি লকারও জব্দ করে সিআইসি। একই শাখায় তাঁর দুটি ব্যাংক হিসাবও আটকে দেওয়া হয়—একটিতে ১২ লাখ টাকার এফডিআর এবং অন্যটিতে ৪৪ লাখ টাকা পাওয়া যায়।
এনবিআর শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে কর ফাঁকির তদন্ত পরিচালনা করছে, অন্যদিকে দুদক তাঁর ও পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে অবৈধ সম্পদ অর্জন ও দুর্নীতির অনুসন্ধান চালাচ্ছে। আদালতের নির্দেশে শেখ হাসিনা, তাঁর ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়, মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ পুতুল, বোন শেখ রেহানাসহ পরিবারের স্বার্থসংশ্লিষ্ট সব ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধ করা হয়েছে।
গত ১৭ নভেম্বর, জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল শেখ হাসিনাকে মৃত্যুদণ্ড দেন। তাঁর সব সম্পদ বাজেয়াপ্ত করার আদেশও দেওয়া হয়।
গত বছরের ৫ আগস্ট, ছাত্র–জনতার অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভারত পালিয়ে যান। পরবর্তীতে অন্তর্বর্তী সরকার তাঁর বিরুদ্ধে দুর্নীতি, কর ফাঁকি ও অবৈধ সম্পদের তদন্ত শুরু করে।
