ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) বেশিরভাগ দেশ যখন কঠোর অভিবাসন নীতি গ্রহণ করছে, তখন ব্যতিক্রমী দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে স্পেন। দেশটির সহজ ও মানবিক অভিবাসন নীতি, বিশেষ করে ‘আরায়েগো’ নিয়মিতকরণ পদ্ধতি, এশিয়ার অভিবাসীদের জন্য হয়ে উঠছে আশার আলো। এই নীতির আওতায় দীর্ঘ সময় বসবাস, কর্মসংস্থান বা সামাজিক সংযোগের ভিত্তিতে অভিবাসীরা বৈধতার সুযোগ পাচ্ছেন।
অন্য দেশের কঠোর নীতি বনাম স্পেনের মানবিকতা
অভিবাসন বিষয়ক বিশ্লেষকরা বলছেন, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ফ্রান্স, জার্মানি, বেলজিয়াম, ইতালিসহ ইউরোপের বিভিন্ন দেশে অভিবাসন নীতি কঠোর হয়ে উঠেছে। অন্যদিকে, স্পেনের সোশ্যালিস্ট সরকার অনিয়মিত অভিবাসীদের জন্য তুলনামূলকভাবে সহজ নিয়ম তৈরি করেছে। ফলে বাংলাদেশ, পাকিস্তান, ভারত, নেপাল ও শ্রীলঙ্কার অভিবাসীরা এখন বৈধতা পাওয়ার লক্ষ্যে স্পেনের দিকে ঝুঁকছেন।
একজন নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক অভিবাসী জানান, “অন্যান্য দেশে অনেক বছর অনিয়মিতভাবে থাকার পর নিয়মিত হতে চাইলে কঠিন আইনি প্রক্রিয়া ও ডকুমেন্ট জটিলতায় পড়তে হয়। কিন্তু স্পেনে মানবিক বিবেচনায় অন্তর্ভুক্তির সুযোগ থাকায় আমরা স্বস্তি পাচ্ছি।”
স্পেনে নিয়মিতকরণের হার বাড়ছে
স্পেনের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সাম্প্রতিক প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, গত কয়েক বছরে নিয়মিত হওয়া অভিবাসীদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য সংখ্যকই এশিয়ার নাগরিক। সরকার শ্রমিক সংকট দূর করতে নিয়মিতকরণ আইনকে আরও সহজ ও দ্রুততর করছে।
তবে মানবাধিকার সংস্থাগুলো বলছে, প্রয়োজনীয় নথিপত্র না থাকায় এখনো অনেক অভিবাসী বৈধতার সুযোগ পাচ্ছেন না। তারা প্রশাসনিক সহায়তা ও স্থানীয় কমিউনিটির ভূমিকা আরও জোরদার করার দাবি জানিয়েছে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, স্পেনের মানবিক অভিবাসন নীতি ইউরোপে ইতিবাচক দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। নিয়মিতকরণের পথ যত সহজ হবে, ততই অভিবাসীরা সমাজের মূলধারায় যুক্ত হতে পারবেন—এমনটাই আশা করছেন সংশ্লিষ্টরা।