আশ্রয়প্রার্থীদের নিজ দেশে ভ্রমণ নিষিদ্ধ করল সুইজারল্যান্ড

Swiss migration policy

অভিবাসন নীতি আরও কঠোর করছে ইউরোপের নিরপেক্ষ দেশ সুইজারল্যান্ড। নতুন নিয়ম অনুযায়ী, দেশটিতে অবস্থানরত আশ্রয়প্রার্থী, অস্থায়ী সুরক্ষা পাওয়া ও সুরক্ষার প্রয়োজন এমন ব্যক্তিরা আর নিজ দেশ বা তৃতীয় কোনো দেশে ভ্রমণ করতে পারবেন না।

সুইস পার্লামেন্টে গৃহীত এক সিদ্ধান্তের পর দেশটির সরকার এই ঘোষণা দেয়। আগামী বছর থেকে নিয়মটি কার্যকর হবে, এবং ২০২৬ সালের ৫ ফেব্রুয়ারির পর তা চূড়ান্তভাবে বাস্তবায়ন করা হবে বলে জানিয়েছে সুইস ফেডারেল কাউন্সিল।

জরুরি প্রয়োজনে বিশেষ অনুমতি

নতুন নিয়মে কেবল আত্মীয়স্বজনের মৃত্যু বা অন্যান্য বিশেষ জরুরি পরিস্থিতিতে সীমিত সময়ের জন্য ভ্রমণের অনুমতি মিলবে।
এই ক্ষেত্রে আশ্রয়প্রার্থীদের সুইজারল্যান্ডের অভিবাসন বিষয়ক সচিবালয় (SEM)-এর কাছে আবেদন করতে হবে।
সংস্থাটি প্রতিটি আবেদন যাচাই-বাছাই করে প্রয়োজনীয় অনুমতি দেবে বলে জানানো হয়েছে।

ইউক্রেনীয় শরণার্থীদের জন্য শিথিলতা

রাশিয়ার আগ্রাসনের কারণে অস্থায়ী সুরক্ষা পাওয়া ইউক্রেনীয় শরণার্থীদের জন্য এই বিধিনিষেধ কিছুটা শিথিল থাকবে।
তারা ভবিষ্যতে প্রতি ছয় মাসে ১৫ দিন ইউক্রেনে থাকার অনুমতি পাবেন। বর্তমানে তারা প্রতি তিন মাসে ১৫ দিন নিজ দেশে যেতে পারেন।

অভিবাসন আইনের ধারাগুলো বাস্তবায়ন

সুইস সরকার জানিয়েছে, এই সিদ্ধান্তের মাধ্যমে ২০২১ সালে অনুমোদিত বিদেশি নাগরিক ও অন্তর্ভুক্তি আইন (Foreign Nationals and Integration Act)–এর ধারাগুলো কার্যকর করা হচ্ছে। ২০২২ সালে ইউক্রেন যুদ্ধে রাশিয়ার হামলার পর বহু ইউক্রেনীয় নাগরিক আশ্রয়ের খোঁজে সুইজারল্যান্ডে আসেন। তখনই প্রথমবারের মতো “এস ক্যাটাগরি” নামে বিশেষ সুরক্ষা ব্যবস্থা চালু করে দেশটি, যার কারণে আইনটির বাস্তবায়ন বিলম্বিত হয়েছিল।

জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক হাইকমিশন (UNHCR) সুইজারল্যান্ডের এই নতুন ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞাকে “অসম ও মানবিক দিক বিবর্জিত” বলে মন্তব্য করেছে। সংস্থাটি জানিয়েছে, এই সিদ্ধান্তে পালিয়ে আসা ও নিপীড়নের কারণে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়া পরিবারের মানবিক পরিস্থিতি বিবেচনায় নেওয়া হয়নি।

ইউরোপের অনেক দেশ, যেমন জার্মানি, আগে থেকেই আশ্রয়প্রার্থীদের নিজ দেশে ভ্রমণের ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে। তবে সুইজারল্যান্ডের নতুন নিয়মটি আরও কঠোর, কারণ এটি নিজ দেশের পাশাপাশি তৃতীয় দেশেও ভ্রমণ নিষিদ্ধ করেছে।