জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) থেকে পদত্যাগ করেছেন দলটির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম সদস্যসচিব ডা. তাসনিম জারা এবং তার স্বামী এনসিপির যুগ্ম আহ্বায়ক খালেদ সাইফুল্লাহ। শনিবার সন্ধ্যা সাতটার দিকে দলটির হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে পদত্যাগের বিষয়টি জানান তারা।
ডা. তাসনিম জারার পদত্যাগের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন এনসিপির যুগ্ম সদস্যসচিব ও মিডিয়া সেলের সম্পাদক মুশফিক উস সালেহীন। অন্যদিকে খালেদ সাইফুল্লাহ গণমাধ্যমকে জানান, তিনি ব্যক্তিগত কারণে দল থেকে পদত্যাগ করছেন।
পদত্যাগের পর খালেদ সাইফুল্লাহ তার ভেরিফায়েড ফেসবুক প্রোফাইল থেকে জানান, তিনি ঢাকা-৯ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নেবেন।
এদিকে এনসিপির অভ্যন্তরে জোট রাজনীতি নিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই অসন্তোষ বিরাজ করছিল। দলটির জ্যেষ্ঠ নারী নেতাদের অধিকাংশই জামায়াতসহ ধর্মভিত্তিক দলগুলোর সঙ্গে নির্বাচনী জোটের বিরোধিতা করে আসছিলেন। এ বিষয়ে জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক সামান্তা শারমিন, জ্যেষ্ঠ সদস্যসচিব নাহিদ সারোয়ার নিভা, যুগ্ম আহ্বায়ক তাজনুভা জাবীন এবং যুগ্ম সদস্যসচিব নুসরাত তাবাসসুমসহ একাধিক নেতা দলীয় ফোরামে ক্ষোভ প্রকাশ করেন।
শনিবার নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে দেওয়া এক পোস্টে ডা. তাসনিম জারা জানান, একটি রাজনৈতিক দলের প্ল্যাটফর্ম থেকে সংসদে গিয়ে ঢাকা-৯ আসনের মানুষের ও দেশের সেবা করার স্বপ্ন ছিল তার। তবে বর্তমান বাস্তবতায় তিনি কোনো নির্দিষ্ট দল বা জোটের প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে অংশ নেবেন না। নতুন রাজনৈতিক সংস্কৃতি গড়ার প্রতিশ্রুতি রক্ষায় তিনি স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবেই নির্বাচনে অংশ নেবেন বলে ঘোষণা দেন।
ডা. তাসনিম জারা আগামী নির্বাচনের সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে এর আগে গণচাঁদার মাধ্যমে প্রায় ৪৭ লাখ টাকা সংগ্রহ করেছিলেন। স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করতে প্রয়োজনীয় এক শতাংশ ভোটারের স্বাক্ষর সংগ্রহের জন্য তিনি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আহ্বান জানিয়েছেন। পাশাপাশি যারা তাকে নির্বাচনী তহবিলে অনুদান দিয়েছিলেন, স্বতন্ত্র প্রার্থী হওয়ায় তাদের অর্থ ফেরত দেওয়ার প্রতিশ্রুতিও দিয়েছেন।
এনসিপি সূত্রে জানা গেছে, জামায়াতে ইসলামীর সঙ্গে নির্বাচনী জোট করায় অসন্তুষ্ট হয়েই ডা. তাসনিম জারা দলটি থেকে পদত্যাগ করেছেন। এর আগে ঢাকা-৯ আসনে জোটের প্রার্থী হিসেবে তাকে মনোনয়ন দেওয়ার আলোচনা চলছিল। তার পদত্যাগের পর ওই আসনে এনসিপির প্রার্থী হিসেবে হুমায়রা নূরকে মনোনয়ন দেওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। তবে জামায়াতে ইসলামি এই আসন ছেড়ে দেবে কি না, সে বিষয়ে এখনও নিশ্চিত কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি।
