শারজাহ ক্রিকেট স্টেডিয়ামে আজ দেখা গেল বাংলাদেশের ব্যাটিং লাইনআপের এক নাটকীয় ধ্বস। ওপেনার তানজিদ হাসান তামিম ব্যতিক্রম হলেও বাকিদের ব্যর্থতায় তাসের ঘরের মতো ভেঙে পড়ে ব্যাটিং অর্ডার। তবে শেষদিকে জাকের আলি, হাসান মাহমুদ ও শরিফুল ইসলামের ছোট ছোট ইনিংসে দেড়শ রানের কোটা পার করে বাংলাদেশ।
কিন্তু এই সংগ্রহ রক্ষা করার মতো যথেষ্ট ছিল না। ব্যাটিংয়ে দৃঢ়তা দেখিয়ে মাত্র ৫ বল হাতে রেখেই ৭ উইকেটে জয় তুলে নেয় আরব আমিরাত। তিন ম্যাচের সিরিজে ২-১ ব্যবধানে সিরিজ জিতে নিয়ে রেকর্ড গড়ল তারা। এটি ছিল প্রথমবারের মতো কোনো টেস্ট খেলুড়ে দলের বিপক্ষে সিরিজ জয়ের সাফল্য।
টস হেরে ব্যাট করতে নামা বাংলাদেশ শুরু থেকেই ধুকতে থাকে। ইনিংসের প্রথম ওভারেই ফিরে যান পারভেজ হোসেন ইমন। লিটন দাস করেন মাত্র ১৪ রান। তাওহীদ হৃদয় ফেরেন শূন্য হাতে, মাহেদি হাসান করেন ২ রান। একপ্রান্ত আগলে রাখা তানজিদ হাসান ৪০ রানে বোল্ড হন আকিফ রাজার বলে।
উইকেটের মিছিল থামেনি এরপরও। শামিম, রিশাদ ও তানজিম হাসান সাকিবের ব্যর্থতায় বাংলাদেশের সংগ্রহ দাঁড়ায় চাপে পড়া এক স্কোরে। তবে জাকের আলির ৪১ রানের ইনিংস, হাসান মাহমুদের ১৫ বলে ২৬ এবং শরিফুল ইসলামের ৭ বলে ১৬ রানে দল পায় ২০ ওভারে ৯ উইকেটে ১৬২ রান।
১৬৩ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে কিছুটা ব্যাকফুটে গেলেও আত্মবিশ্বাস হারায়নি স্বাগতিকরা। ওপেনার ওয়াসিম ৯ রানে বিদায় নিলেও মোহাম্মদ জোহাইব ২৯ ও রাহুল ১৩ রান করে কিছুটা ভিত গড়ে দেন। এরপর মাঠে নামেন দুই নায়ক—আলিশান শারাফু ও আসিফ খান।
দুজনের অবিচ্ছিন্ন ৮৭ রানের জুটি নিশ্চিত করে দলের ঐতিহাসিক জয়। শারাফু ৪৭ বলে ৬৮ রান করেন, যার মধ্যে ছিল ৫টি চার ও ৩টি ছক্কা। আসিফ খান অপরাজিত থাকেন ২৬ বলে ৫টি ছক্কার সাহায্যে ৪১ রানে।
র্যাংকিংয়ের ১৫ নম্বরে থাকা আরব আমিরাতের কাছে এই জয় শুধু আরেকটি ম্যাচ জেতা নয়, এটি একটি ঐতিহাসিক কীর্তি। বাংলাদেশের মতো টেস্ট খেলুড়ে দেশের বিপক্ষে প্রথমবার সিরিজ জয়ের গৌরব অর্জন করল তারা।
বাংলাদেশের ব্যর্থতা এবং আমিরাতের পরিকল্পিত ক্রিকেট আজকের ম্যাচকে পরিণত করেছে এক নাটকীয় অধ্যায়ে। যা মনে রাখবে ক্রিকেট বিশ্ব অনেকদিন।