প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসন শিক্ষার্থী ভিসা প্রক্রিয়ায় বড় ধরনের পরিবর্তনের ঘোষণা দিয়েছে। মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের নির্দেশে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের মার্কিন দূতাবাসগুলোকে শিক্ষার্থী ভিসার সাক্ষাৎকারের জন্য নতুন করে অ্যাপয়েন্টমেন্ট না নিতে বলা হয়েছে। এ নির্দেশনা পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত বলবৎ থাকবে।
একইসঙ্গে, শিক্ষার্থী ও বৈদেশিক বিনিময় কর্মসূচির আওতাধীন ভিসার আবেদনকারীদের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের ওপর আরও কড়া নজরদারির প্রস্তুতি নিচ্ছে ট্রাম্প প্রশাসন। এসব পদক্ষেপের ফলে দূতাবাসগুলোতে কাজের চাপ বাড়বে এবং প্রক্রিয়া দীর্ঘায়িত হবে বলে কূটনৈতিক বার্তায় উল্লেখ করা হয়েছে।
মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও এক স্মারকে বলেন, যেসব শিক্ষার্থী এখনও সাক্ষাৎকারের অ্যাপয়েন্টমেন্ট পাননি, তাদের আবেদন ক্যালেন্ডার থেকে সরিয়ে ফেলতে হবে। তবে যাঁদের অ্যাপয়েন্টমেন্ট ইতিমধ্যে নির্ধারিত হয়েছে, তারা সাক্ষাৎকার দিতে পারবেন।
এই পদক্ষেপের পেছনে প্রশাসনের যুক্তি—ভিসা প্রদানের আগে আবেদনকারীদের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম যাচাইয়ের প্রয়োজনীয়তা। পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ট্যামি ব্রুস বলেন, “কে যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ করছে, তা যাচাই করার প্রক্রিয়াকে আমরা অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে দেখি এবং তা অব্যাহত থাকবে।”
এই ঘোষণা এমন সময় এলো, যখন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের সঙ্গে দেশের শীর্ষ বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর দ্বন্দ্ব চরমে উঠেছে। ট্রাম্প অভিযোগ করেছেন, এসব প্রতিষ্ঠান অতিরিক্ত বামপন্থী এবং ক্যাম্পাসে ইহুদিবিদ্বেষের সুযোগ দিচ্ছে। কিছু বিশ্ববিদ্যালয় ‘বৈষম্যমূলক ভর্তি নীতি’ অনুসরণ করছে বলেও তিনি দাবি করেছেন।
বিশেষ করে হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয় প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের টার্গেটে রয়েছে। গত সপ্তাহে তাঁর প্রশাসন হার্ভার্ডের বিদেশি শিক্ষার্থী ভর্তি ও গবেষক আমন্ত্রণের অনুমোদন বাতিল করে, যদিও ফেডারেল আদালত তা স্থগিত করেছে।
যুক্তরাষ্ট্রের অনেক উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠান আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের ওপর অর্থনৈতিকভাবে নির্ভরশীল। কারণ তারা স্থানীয় শিক্ষার্থীদের তুলনায় অনেক বেশি টিউশন ফি প্রদান করে থাকে। ফলে ভিসা প্রক্রিয়ার এমন কড়াকড়ি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর জন্য বড় আর্থিক চাপ তৈরি করতে পারে।
বিশ্লেষকদের মতে, যদি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম যাচাই ও অ্যাপয়েন্টমেন্ট স্থগিতাদেশ দীর্ঘায়িত হয়, তবে আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের ভিসা পাওয়া আরও কঠিন হয়ে পড়বে। এতে শিক্ষার্থীদের পড়ালেখা, গবেষণা এবং উচ্চশিক্ষা অর্জনের পথ বাধাগ্রস্ত হবে।