যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসকারী শত শত বিদেশি শিক্ষার্থীর ভিসা বাতিল করেছে ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসন। বড় পরিসরের অভিবাসনবিরোধী অভিযানের অংশ হিসেবে এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে সংশ্লিষ্ট সূত্র। এ ঘটনায় বহু শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান হতবাক, কারণ শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে নেওয়া পদক্ষেপের কারণ অধিকাংশ ক্ষেত্রেই বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ জানে না।
যুক্তরাষ্ট্রের ১৩০টির বেশি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এবং ৪০টি অঙ্গরাজ্যে ছড়িয়ে থাকা কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের ১ হাজারেরও বেশি শিক্ষার্থীর ভিসা বা থাকার বৈধতা বাতিল করা হয়েছে। এসব শিক্ষার্থীদের অনেকেই সদ্য স্নাতক শেষ করেছেন।
মিডল টেনেসি স্টেট বিশ্ববিদ্যালয়ের মুখপাত্র জিমি হার্ট জানান, “আমাদের ছয় শিক্ষার্থীর ভিসা বাতিল হয়েছে। পরিবর্তনের কারণ আমরা জানি না, শুধু জানি যে SEVIS-এ (Student and Exchange Visitor Information System) কোনো পরিবর্তন আনা হয়েছে।”
ওরেগন বিশ্ববিদ্যালয়ের মুখপাত্র এরিক হাওয়াল্ড জানান, হোমল্যান্ড সিকিউরিটি বিভাগ ‘অজ্ঞাত অপরাধের’ ভিত্তিতে চার শিক্ষার্থীর ভিসা বাতিল করেছে, বিশ্ববিদ্যালয়কে আগে কিছুই জানানো হয়নি।
ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের চ্যান্সেলর হুলিও ফ্রেঙ্ক জানান, “আমাদের ১২ জন বর্তমান ও সদ্য স্নাতক শিক্ষার্থীর ভিসা বাতিল হয়েছে। নোটিশে বলা হয়েছে, ভিসার শর্ত লঙ্ঘনের কারণে এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।”
‘আন্দোলনের জন্য নয়, শিক্ষার জন্য এসেছেন’ – মার্কো রুবিও
মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও ভিসা বাতিলের বিষয়ে বলেন, “তাঁরা এখানে ক্লাস করতে এসেছেন, আন্দোলন করতে নয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্যক্রমকে বাধাগ্রস্ত করলে সহ্য করা হবে না।”
তবে, শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে নির্দিষ্ট অভিযোগ বা তথ্য না জানিয়েই ভিসা বাতিল করায় বিষয়টি নিয়ে উদ্বেগ বাড়ছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে।
ফেডারেল আদালতে ট্রাম্প প্রশাসনের বিরুদ্ধে মামলা
ভিসা বাতিলের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আটলান্টার নর্দার্ন জর্জিয়া আদালতে ট্রাম্প প্রশাসনের বিরুদ্ধে একটি ফেডারেল মামলা হয়েছে। মামলায় ১৩৩ জন শিক্ষার্থীর ঘটনা তুলে ধরা হয়েছে, যাঁরা ভারত, চীন, জাপান, কলম্বিয়া ও মেক্সিকো থেকে এসেছেন। শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার স্বার্থে মামলায় তাদের নাম গোপন রাখা হয়েছে।
মামলায় অ্যাটর্নি জেনারেল পাম বন্ডি, হোমল্যান্ড সিকিউরিটি মন্ত্রী ক্রিস্টি নোয়েম এবং আইসিই’র ভারপ্রাপ্ত পরিচালক টড লায়ন্স– এই তিন কর্মকর্তাকে আসামি করা হয়েছে।
মামলার অভিযোগে বলা হয়েছে, আইসিই বেআইনিভাবে শিক্ষার্থীদের আইনি বৈধতা বাতিল করেছে, যা তাদের পড়াশোনা ও কর্মসংস্থানের সুযোগ কেড়ে নিয়েছে এবং গ্রেপ্তার ও বিতাড়নের ঝুঁকিতে ফেলেছে।
যাঁদের ভিসা বাতিল হয়েছে, তাঁদের এখন অবিলম্বে যুক্তরাষ্ট্র ছাড়তে হবে কিনা, না কি তাঁরা শিক্ষাজীবন চালিয়ে যেতে পারবেন—এই বিষয়ে সরকারি কোনো স্পষ্টতা পাওয়া যায়নি।