গাজা উপত্যকায় চলমান ইসরায়েলি অভিযানের ফলে ভয়াবহ মানবিক সংকট দেখা দিয়েছে। নিহত ও আহতের সংখ্যা প্রতিদিনই বাড়ছে। এই পরিস্থিতিতে কিছু ফিলিস্তিনি পরিবারকে মানবিক কারণে যুক্তরাষ্ট্রে চিকিৎসার সুযোগ দেওয়া হচ্ছিল। তবে হঠাৎ যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এই প্রক্রিয়ায় বড় পরিবর্তন আনার ঘোষণা দিয়েছে।
শনিবার (১৬ আগস্ট) মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায়, গাজার ফিলিস্তিনিদের জন্য সব ধরনের মার্কিন ভিসা আপাতত স্থগিত করা হলো। এটি করা হয়েছে “বর্তমান প্রক্রিয়া ও পদ্ধতির পূর্ণ পর্যালোচনার” কারণে। পর্যালোচনা শেষ না হওয়া পর্যন্ত নতুন ভিসা প্রদান করা হবে না।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে পোস্ট দিয়ে বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। বার্তায় বলা হয়, “বর্তমান চিকিৎসা ও মানবিক ভিত্তিতে অল্পসংখ্যক অস্থায়ী মার্কিন ভিসা প্রদানের পদ্ধতি আমরা পূর্ণভাবে পর্যালোচনা করছি। এই পর্যালোচনা শেষ না হওয়া পর্যন্ত গাজার ফিলিস্তিনিদের ভিসা স্থগিত থাকবে।”
বিশ্লেষকরা মনে করছেন, রাজনৈতিক চাপের কারণে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সম্প্রতি মার্কিন অলাভজনক সংস্থা ‘হিল’-এর মাধ্যমে গুরুতর আহত তিন ফিলিস্তিনি শিশু এবং তাদের পরিবারের সদস্যদের চিকিৎসার জন্য যুক্তরাষ্ট্রে আনা হয়। খবর প্রকাশ্যে আসার পর কট্টর ডানপন্থি রাজনৈতিক কর্মী লরা লুম ট্রাম্প প্রশাসনের সমালোচনা করেন। তার এক্সে পোস্টে লেখা হয়, “কীভাবে ইসলামিক অভিবাসনপ্রত্যাশীদের প্রবেশ দেওয়াকে অগ্রাধিকার দেওয়া হচ্ছে?”। পরে রিপাবলিকান পার্টির বহু নেতা-সমর্থক তাকে সমর্থন জানান। কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ভিসা স্থগিতের ঘোষণা দেয়।
গাজার মানবিক পরিস্থিতি ক্রমেই গুরুতর হচ্ছে। ২০২৩ সাল থেকে চলা ইসরায়েলি সামরিক অভিযানে প্রায় ৬১,৯০০ জন নিহত এবং ১,৫০,০০০-এর বেশি আহত হয়েছেন। নিহত ও আহতদের মধ্যে প্রায় ৫৬ শতাংশই শিশু, নারী ও বেসামরিক নাগরিক।
তথ্যসূত্র: আল-জাজিরা, আনাদোলু এজেন্সি
