বাঙালির চিরগৌরবের দিন আজ। মহান মুক্তিযুদ্ধে চূড়ান্ত বিজয়ের মধ্য দিয়ে ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর বিশ্বমানচিত্রে স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে বাংলাদেশ। যুদ্ধজয়ের অপার আনন্দ, গৌরব এবং অগণিত বীর সন্তানের আত্মদানের গভীর বেদনা নিয়ে আজ জাতি উদযাপন করছে ৫৫তম মহান বিজয় দিবস। মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে প্রেসিডেন্ট ও প্রধান উপদেষ্টা পৃথক পৃথক বাণী দিয়েছেন।
রাষ্ট্রপতির বাণী
বিজয় দিবস উপলক্ষে দেওয়া বাণীতে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন বলেন, মুক্তিযুদ্ধের লক্ষ্য কেবল রাজনৈতিক স্বাধীনতা অর্জন নয়; অর্থনৈতিক মুক্তি ও সামাজিক ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠাও ছিল এর অন্যতম উদ্দেশ্য। তবে স্বাধীনতার পাঁচ দশক পেরিয়েও জনগণের পূর্ণ রাজনৈতিক ও আর্থসামাজিক মুক্তি অর্জিত হয়নি বলে তিনি উল্লেখ করেন।
তিনি বলেন, ২০২৪ সালের ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থান একটি বৈষম্যহীন, দুর্নীতিমুক্ত ও ন্যায়ভিত্তিক বাংলাদেশ গড়ার নতুন আশা জাগিয়েছে। স্বাধীনতার প্রকৃত সুফল জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছাতে গণতন্ত্রকে আরও শক্তিশালী ও প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দেওয়ার ওপর গুরুত্বারোপ করেন রাষ্ট্রপতি।
প্রধান উপদেষ্টার বাণী
প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস তার বাণীতে বলেন, মুক্তিযুদ্ধের বিজয়ের মধ্য দিয়ে যে স্বাধীনতার সূর্য উদিত হয়েছিল, তা বিগত বছরগুলোতে স্বৈরাচার ও অপশাসনের কারণে বারবার ম্লান হয়েছে। জুলাই গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে আবারও একটি বৈষম্যহীন, দুর্নীতিমুক্ত ও গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে।
তিনি বলেন, বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার একটি উন্নত ও সুশাসিত বাংলাদেশের ভিত্তি গড়তে যে সংস্কার কর্মসূচি গ্রহণ করেছে, তা সফল পরিসমাপ্তির পথে এগোচ্ছে। এবারের বিজয় দিবসকে জাতীয় জীবনে নতুনভাবে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার দিন হিসেবে আখ্যায়িত করে তিনি সবাইকে মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানান।
তারেক রহমানের বাণী
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান তার বাণীতে বলেন, স্বাধীনতার ঘোষক প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের ডাকে শুরু হওয়া মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে পাক হানাদার বাহিনী পরাজিত হয়। তিনি বলেন, শোষণমুক্ত বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার প্রত্যয় ছিল নতুন রাষ্ট্রের মূল দর্শন।
তারেক রহমান অভিযোগ করেন, ফ্যাসিস্ট গোষ্ঠী বারবার দুঃশাসন চাপিয়ে দিয়ে জনগণের অধিকার হরণ করেছে। তিনি বলেন, ‘২৪-এর জুলাই–আগস্টের ছাত্র-জনতার আন্দোলনে ফ্যাসিস্ট শক্তির পরাজয় ঘটে। এখন প্রয়োজন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের মাধ্যমে একটি জবাবদিহিমূলক সরকার প্রতিষ্ঠা করা।
জামায়াত আমিরের বাণী
জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান তার বাণীতে বলেন, একাত্তরের বিজয় দিবস আত্মত্যাগের মহিমায় ভাস্বর এক গৌরবময় দিন। দীর্ঘ নয় মাসের রক্তক্ষয়ী সংগ্রাম ও অসংখ্য শহীদের আত্মদানের বিনিময়ে এই বিজয় অর্জিত হয়েছে।
তিনি বলেন, চব্বিশের ছাত্র-জনতার বিপ্লব মুক্তিযুদ্ধের আকাঙ্ক্ষাকে পরিপূর্ণতা দেওয়ার নতুন অধ্যায় সূচনা করেছে। বিজয়ের এই দিনে সব বিভেদ ভুলে শান্তিপূর্ণ, সমৃদ্ধ ও কল্যাণকর রাষ্ট্র গড়তে সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার আহ্বান জানান তিনি।
