কারা কারা পর্তুগিজ নাগরিকত্বের আবেদন করতে পারবেন

পর্তুগিজ নাগরিকত্বে

কারা কারা পর্তুগালের নাগরিকত্ব কিভাবে পাবে, কিভাবে আবেদন করবো এইসব কিছুর উত্তর পাবেন। তাহলে চলুন দেখি কারা কারা পর্তুগিজ নাগরিকত্বের আবেদন করতে পারবেন।

প্রথমত, আপনি যদি পর্তুগালে জন্মগ্রহণ করেন, তাহলে আপনি স্বয়ংক্রিয়ভাবে পর্তুগীজ নাগরিক হবেন। এমনকি যদি আপনার পিতামাতা নাগরিক নাও হন। আপনি যদি পর্তুগীজ নাগরিকের সন্তান হন, মা বা বাবা যেকোন একজন পর্তুগীজ নাগরিক হয়ে থাকেন  তাহলে আপনি যেখানেই জন্মগ্রহণ করুন না কেন পর্তুগীজ নাগরিক হতে পারবেন। এর জন্য কিছু নির্দিষ্ট শর্ত পূরণ করতে হবে, যেমন আপনার পিতামাতার সাথে আপনার ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক থাকতে হবে এবং আপনাকে অবশ্যই নির্দিষ্ট সময়সীমার মধ্যে আবেদন করতে হবে।

দ্বিতীয়ত, যেকোনো নাগরিকত্বের পিতামাতার সন্তান হলেও, যদি শিশুটি পর্তুগালে জন্মগ্রহণ করে, তবে সেই শিশুটি জন্মের ভিত্তিতে স্বয়ংক্রিয়ভাবে পর্তুগীজ নাগরিক হবে। এটি jus soli নীতির অধীনে আসে, যার অর্থ “মাটির আইন”।

তৃতীয়ত, পিতামাতা ৩য় কোন দেশের নাগরিক হন এবং তারা প্রমাণ করতে পারেন যে তারা কমপক্ষে ৫ বছর ধরে পর্তুগালে বৈধভাবে বসবাস করছে, তাহলে তারা তাদের পর্তুগালে জন্মগ্রহণকারী সন্তানের জন্য পর্তুগীজ নাগরিকত্বের জন্য আবেদন করতে পারবেন।

চতুর্থত, আপনি যদি পর্তুগালে বৈধভাবে ৫ বছরের বেশি সময় অবস্থান করেন এবং পর্তুগীজ ভাষার A2 স্তরের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন এমন সার্টিফিকেট দেখাতে পারেন, তাহলে আপনি পর্তুগীজ নাগরিকত্বের জন্য আবেদন করতে পারবেন। আপনার অবশ্যই পর্তুগালের আইন মেনে চলতে হবে এবং কোনও গুরুতর অপরাধে জড়িত থাকা যাবে না।

পঞ্চমত , আপনি যদি পর্তুগীজ নাগরিকের সাথে বিয়ে করেন বা লিভ-ইন পার্টনার হিসাবে ৩ বছরের বেশি সময় ধরে একসাথে বসবাস করেন (সিভিল রেজিস্ট্রি অফিসে নিবন্ধিত) তাহলে ৩ বছর পর আপনি পর্তুগীজ পাসপোর্টের জন্য আবেদন করতে পারবেন।

ষষ্ঠত, যদি একজন পর্তুগীজ নাগরিক কাউকে দত্তক নেয়, তাহলে দত্তক নেওয়া শিশুটি 3 বছর পর্তুগালে থাকার পর পর্তুগীজ নাগরিকত্ব লাভ করতে পারে। এই নীতিটি “jus sanguinis” (জন্মের মাধ্যমে নাগরিকত্ব) নীতির উপর ভিত্তি করে। এই নীতি অনুসারে, দত্তক নেওয়া শিশুটি স্বয়ংক্রিয়ভাবে তাদের দত্তক পিতামাতার নাগরিকত্ব লাভ করে।

সপ্তমত, আপনি যদি ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) যেকোনো নাগরিকের সাথে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন এবং পর্তুগালে 5 বছর স্থায়ীভাবে বসবাস করেন, তাহলে আপনি পর্তুগীজ নাগরিকত্বের জন্য আবেদন করতে পারবেন।

আমরা নরমালি যারা পাসপোর্ট এর আবেদন করে থাকি সবাই নাতুরালাইজেশনের মাধ্যমে আবেদন করে থাকেন। এখন কিছু প্রশ্ন উদয় হলো মনে জেতা সবাই যারা জমা দিবেন তারা মাথায় ঘুরপাক খাওয়ান। যেমন – নাগরিকত্বের আবেদন করতে কি কি ডকুমেন্টস লাগবে ? কোথায় থেকে সত্যায়ন করতে হবে ? কোথায় জমা দিব ? কত দিন সময় লাগবে ?
নাগরিকত্বের মেইন শর্ত হলো আপনাকে বৈধভাবে ৫ বছরের বেশি ৬ বছরের কম সময় পর্তুগাল অবস্থান করতে হবে এবং আপনি কোন প্রকার মামলায় পর্তুগাল কিংবা নিজ দেশে ২-৩ বছরের বেশি সাজায় সাজাপ্রাপ্ত নন অর্থাৎ আপনার নামে কোনো বড় ধরণের সাজা নাই।

কি কি ডকুমেন্টস লাগবে?

  • বাংলাদেশ থেকে আপনার জন্ম সনদ ( অরিজিনাল )
  • বাংলাদেশের পুলিশ ক্লিয়ারেন্স সার্টিফিকেট (অরিজিনাল )
  • পর্তুগীজ ভাষার দক্ষতার সনদ ( A2 সার্টিফিকেটে )
  • পর্তুগালের পুলিশ ক্লিয়ারেন্স সার্টিফিকেট।

প্রথমে বাংলাদেশ থেকে উপরের এই দুইটা জিনিস নোটারি পাবলিক + আইন মন্ত্রণালয় + পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে সত্যায়িত করে নিতে হবে. তার এইগুলো বাংলাদেশ হাই কমিশন ইন নিউ দিল্লি থেকে সত্যায়িত করে তবে, তারপর পর্তুগীজ কনস্যুলেট / এম্বাসি ইন নিউ দিল্লি থেকে সত্যায়িত করতে হবে। তারপর পর্তুগীজ ভাষায় ট্রান্সলেশন করে এখানে থেকে নোটারি করতে হবে । উপরোক্ত ডকুমেন্টস একসাথে করে আপনি জমার দেয়ার জন্য যেকোনো Conservatórias ইংলিশে সিভিল রেজিস্ট্রি অফিসে জমা করতে হবে।  এখানে Instituto dos Registos e do Notariado  নাগরিকত্বের আবেদনের সাথে সাথে আপনাকে প্রসেস নাম্বার দিয়ে দিবে আবার কখন একটু দেরীও করে।  আপনার প্রসেস নম্বর থাকলে, আপনি অনলাইনে আপনার আবেদনের অবস্থা পরীক্ষা করতে পারেন। এটি করার জন্য, Justiça.gov.pt  ওয়েবসাইটে যান। আপনার প্রসেস নম্বর এবং জন্ম তারিখ ব্যবহার করে লগইন করুন। একবার লগইন করার পর, আপনি আপনার আবেদনের স্থিতি, প্রক্রিয়াকরণের অগ্রগতি এবং অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দেখতে পাবেন।পাসপোর্টের আবেদন জমা দেয়ার পর কমপক্ষে 15 থেকে 29 মাস সময় লাগবে সম্পূর্ণ প্রসিডিউর শেষ হতে। আরো বিস্তারিত তথ্য পেতে ভিজিট Bangla Help Line