যুক্তরাষ্ট্রের তিনটি ইরানি পারমাণবিক স্থাপনায় রাতারাতি হামলার পর প্রশ্ন উঠেছে—ইরানের মিত্র রাশিয়া কি এবার সরাসরি পদক্ষেপ নেবে? একদিকে যেমন উচ্চমূল্যের তেলের লাভ এবং ইউক্রেন যুদ্ধ থেকে দৃষ্টি সরানোর কৌশল, অন্যদিকে মধ্যপ্রাচ্যে বছরের পর বছর ধরে গড়ে ওঠা সম্পর্ক ও চুক্তি হারানোর আশঙ্কা—এই দ্বিধার মাঝে দাঁড়িয়ে রয়েছে মস্কো।
রাশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় রোববারের বিবৃতিতে মার্কিন হামলাকে “একটি দায়িত্বহীন সিদ্ধান্ত” হিসেবে আখ্যা দিয়েছে। তারা বলেছে, “একটি স্বাধীন রাষ্ট্রের ভূখণ্ডে ক্ষেপণাস্ত্র ও বোমা হামলা চালানো—যেকোনো যুক্তি দেখানো হোক না কেন—আন্তর্জাতিক আইনের চরম লঙ্ঘন।”
কিন্তু এ বক্তব্যের মধ্যে অন্তর্নিহিত বিরোধও স্পষ্ট। কারণ মস্কো নিজেই ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারি থেকে ইউক্রেনে পূর্ণমাত্রার যুদ্ধ চালিয়ে যাচ্ছে, বোমাবর্ষণ করছে শহরজুড়ে, চলছে স্থল হামলাও।
ক্রেমলিনের বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, “এই হামলা জাতিসংঘ সনদ, আন্তর্জাতিক আইন এবং নিরাপত্তা পরিষদের প্রস্তাবগুলোর সুস্পষ্ট লঙ্ঘন। আরও উদ্বেগের বিষয় হলো, এই হামলা করেছে এমন একটি দেশ যেটি জাতিসংঘের স্থায়ী সদস্য।” অথচ রাশিয়াও জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের স্থায়ী সদস্য এবং যুদ্ধের শুরু থেকেই তারা নিজেই সেই নীতিগুলো লঙ্ঘন করে চলছে।
মস্কোর ভাষ্য অনুযায়ী, “আমরা আগ্রাসন বন্ধের আহ্বান জানাই এবং রাজনৈতিক ও কূটনৈতিক সমাধানের পথে ফিরে যাওয়ার জন্য উদ্যোগ নেওয়ার আহ্বান জানাই।”
এই ঘটনার আগেই, সেন্ট পিটার্সবার্গ আন্তর্জাতিক অর্থনৈতিক ফোরামে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন জানান, ইসরায়েলের বিমান হামলার শুরু থেকে এখন পর্যন্ত ইরান তাদের কাছে কোনো সামরিক সহায়তা চায়নি।
পুতিন আরও বলেন, “মস্কো ও তেহরানের মধ্যে যে ‘বিস্তৃত অংশীদারিত্ব চুক্তি’ আছে, তাতে সামরিক সহযোগিতা সংক্রান্ত কোনো ধারা নেই।” যদিও বাস্তবতা হলো—রাশিয়া ইরানি প্রযুক্তিতে তৈরি শাহেদ-১৩৬ ড্রোন (রুশে পরিচিত ‘গেরানিয়াম-২’) ব্যবহার করে ইউক্রেনে হামলা চালাচ্ছে।