আয়াতুল্লাহ খামেনি এখন কোথায় ?

ayatollah khamenei absence

ইরান-ইসরায়েল সংঘাতের ১২ দিনের রক্তক্ষয়ী যুদ্ধ শেষ হয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও কাতারের আমিরের মধ্যস্থতায়। মঙ্গলবার সকালে কার্যকর হওয়া এই যুদ্ধবিরতিকে ঘিরে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে স্বস্তির সুর শোনা গেলেও ইরানে জন্ম নিয়েছে নতুন এক সংকট—সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনির অনুপস্থিতি।

প্রায় এক সপ্তাহ ধরে জনসমক্ষে অনুপস্থিত রয়েছেন ৮৬ বছর বয়সী খামেনি। এ সময় তিনি কোনো ভাষণ, বিবৃতি বা বার্তা দেননি। অথচ এই সময়েই ইরান ছিল চরম নিরাপত্তা ও রাজনৈতিক সংকটে।

নিউইয়র্ক টাইমসের প্রতিবেদন অনুযায়ী, খামেনির এই অনুপস্থিতির মধ্যেই যুক্তরাষ্ট্র ইরানের তিনটি পারমাণবিক স্থাপনায় হামলা চালায় এবং জবাবে ইরান ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়ে কাতারে অবস্থিত মার্কিন সামরিক ঘাঁটিতে। তারপরেই শুরু হয় যুদ্ধবিরতি প্রক্রিয়া।

কোথায় আছেন খামেনি?

সরকারি সূত্র বলছে, আয়াতুল্লাহ খামেনি বর্তমানে একটি সুরক্ষিত বাংকারে অবস্থান করছেন এবং সম্ভাব্য হত্যাচেষ্টার আশঙ্কায় ইলেকট্রনিক যোগাযোগ এড়িয়ে চলছেন। তবে এ বিষয়ে সরাসরি কিছু জানানো হয়নি বা কোনো দৃশ্যমান প্রমাণও পাওয়া যায়নি।

ইরানের অভ্যন্তরে খামেনির এই নীরবতা ও অনুপস্থিতি নিয়ে বাড়ছে উদ্বেগ ও নানা গুজব। রাজনৈতিক মহল, বিশ্লেষক এবং জনসাধারণের একাংশ মনে করছেন, তাঁর শরীরিক অবস্থা বা নিরাপত্তা নিয়ে কিছু গোপন তথ্য লুকানো হচ্ছে।

খামেনি ইরানের সর্বোচ্চ ধর্মীয় ও রাজনৈতিক নেতা—রাষ্ট্রের প্রতিটি গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্তে তাঁর অনুমোদন আবশ্যক। এমনকি সামরিক পদক্ষেপ বা যুদ্ধবিরতির মতো সিদ্ধান্তেও তাঁর অনুমোদন ছাড়া কিছু হয় না। কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ের বড় বড় সিদ্ধান্তে খামেনির ভূমিকা নিয়ে উঠছে প্রশ্ন। অনেকে জানতে চাইছেন, তিনি আদৌ সিদ্ধান্ত দিচ্ছেন কিনা—নাকি দায়িত্ব নিচ্ছেন অন্য কেউ?

ইরানি রাজনীতিবিদ ও খামেনির ঘনিষ্ঠ উপদেষ্টাদেরও এ বিষয়ে মুখে কুলুপ দেখা গেছে। কেউই প্রকাশ্যে জানাননি, তাঁরা শেষ কবে খামেনির সঙ্গে দেখা করেছেন বা কথা বলেছেন।

খামেনির অনুপস্থিতিতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রতিক্রিয়া জানিয়ে অনেকে বলছেন, তাঁকে না দেখা বা না শোনা পর্যন্ত তাঁরা ইসরায়েলের বিরুদ্ধে বিজয়ের আনন্দ অনুভব করতে পারছেন না।

চ্যাথাম হাউসের বিশ্লেষক সানাম ভাকিল মনে করেন, “খামেনির অনুপস্থিতি ইরানি নেতৃত্বের সতর্ক অবস্থানকে স্পষ্ট করে। তবে আগামী আশুরার (১০ মহররম) আগে যদি তিনি প্রকাশ্যে না আসেন, তাহলে তা হবে ইরানের জন্য এক ভয়াবহ সংকেত।”