ঢাকায় ‘বৈধ ও নিরাপদ হ্যান্ডসেট ব্যবহারে এনইআইআরের গুরুত্ব’ শীর্ষক সেমিনারে দেশের মোবাইল নিরাপত্তা পরিস্থিতি নিয়ে ভয়ংকর পরিসংখ্যান তুলে ধরা হয়েছে। বক্তারা জানান, মাত্র ৫টি আইএমইআই নম্বরের বিপরীতে প্রায় ৫০ লাখ ফোন সক্রিয়—অর্থাৎ একটি আইএমইআই নম্বরের আড়ালে চলছে প্রায় ১০ লাখ হ্যান্ডসেট।
বক্তারা বলেন, আইএমইআই ক্লোনিং করে অবৈধভাবে বাজারে মোবাইল আনানোর প্রবণতা মারাত্মকভাবে বেড়েছে। এতে শুধু রাজস্ব ক্ষতিই নয়, আর্থিক অপরাধ ও সাইবার নিরাপত্তা ঝুঁকিও বৃদ্ধি পাচ্ছে। তারা মনে করেন, ২০১৮ সালে ন্যাশনাল ইকুইপমেন্ট আইডেন্টিটি রেজিস্টার (NEIR) চালু না হওয়ায় পরিস্থিতি আরও জটিল হয়েছে।
অবৈধ আইফোন প্রায় ২১ লাখ!
সেমিনারে টিআরএনবির সাংগঠনিক সম্পাদক আল আমিন দেওয়ান বিটিআরসির তথ্য উপস্থাপন করে জানান—
- দেশের চার অপারেটরের নেটওয়ার্কে সচল ১৯ লাখ ৭৬ হাজার আইফোনের মধ্যে ১৯ লাখ ৫৫ হাজারই অবৈধ,
- সাম্প্রতিক হিসাবে এই সংখ্যা ২১ লাখের কাছাকাছি।
স্যামসাং ফোনেও আতঙ্কজনক চিত্র
দেশে সচল স্যামসাং হ্যান্ডসেটের সংখ্যা ২ কোটি ৩১ লাখ ২৯ হাজার, যার মধ্যে ১ কোটি ৪৯ লাখ ২৬ হাজার অবৈধ হিসেবে চিহ্নিত।
১৬ ডিসেম্বর NEIR চালু: আগের ফোন নিয়ে আতঙ্কের প্রয়োজন নেই
বিটিআরসির কমিশনার মাহমুদ হোসাইন জানান, আগামী ১৬ ডিসেম্বর NEIR চালু হলেও এর আগে যেসব ফোন নেটওয়ার্কে ছিল, সেগুলো স্বয়ংক্রিয়ভাবে নিবন্ধিত হয়ে সচল থাকবে।
তিনি আরও বলেন, মোবাইল বাজারে দাম বাড়ানোর সুযোগ যাতে কেউ না নিতে পারে, তা কঠোরভাবে নজরদারিতে রাখা হচ্ছে।
চুরি হওয়া ফোন সীমান্ত পাড় হয়ে যাচ্ছে দুই দিকেই
সেমিনারে সিআইডির অতিরিক্ত ডিআইজি জাহিদুল ইসলাম জানান—
বাংলাদেশে চুরি বা ছিনতাই হওয়া মোবাইল আখাউড়া, বটুলি, বেনাপোল ও দর্শনা সীমান্ত দিয়ে ভারতে পাচার হয়।
আবার ভারতের চুরি হওয়া ফোন বাংলাদেশে ঢুকছে। পুরোনো যন্ত্রাংশ দিয়ে সেকেন্ডহ্যান্ড ফোন বাজার বড় হয়ে যাওয়ায় হারানো ফোন উদ্ধার করাও কঠিন হয়ে পড়েছে।
