ওষুধ উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান নয়, জীবন রক্ষাকারী ওষুধের দাম নির্ধারণ করবে সরকার—এ কথা স্পষ্ট করে সোমবার এ বিষয়ে পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশ করেছে হাইকোর্ট। রায়ে বলা হয়েছে, জনস্বাস্থ্য সুরক্ষার স্বার্থে জীবনরক্ষাকারী ওষুধের মূল্য নির্ধারণের ক্ষমতা সরকারেরই থাকবে।
২০১৮ সালে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় একটি সার্কুলারের মাধ্যমে পুরো বাজারের ওষুধের মূল্য নির্ধারণ করার ক্ষমতা উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানের হাতে দেয়, তবে ১১৭টি জীবনরক্ষাকারী ওষুধের মূল্য সরকার নির্ধারণ করবে বলে উল্লেখ করা হয়। এই সার্কুলারের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশ (HRPB) জনস্বার্থে রিট দায়ের করে। রিটের শুনানি শেষে হাইকোর্ট রুল জারি করেন।
রিটকারীরা যুক্তি দেন, ওষুধ মানুষের জীবনের সঙ্গে সম্পৃক্ত এবং এটি নাগরিকের বেঁচে থাকার মৌলিক অধিকার। মূল্য নির্ধারণের ক্ষমতা সীমিত করে সরকার যে সার্কুলার জারি করেছিল, তা নাগরিকের জীবনধিকারকে ক্ষুণ্ন করে।
দীর্ঘ শুনানি শেষে বিচারপতি রেজাউল হাসান এবং বিচারপতি বিশ্বজিৎ দেবনাথের হাইকোর্ট বেঞ্চ চলতি বছরের ২৫ আগস্ট রায় দেন। রায়ে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সার্কুলারকে অবৈধ ঘোষণা করে বলা হয়, জীবন রক্ষাকারী ওষুধের মূল্য নির্ধারণ করবে সরকার এবং তা গেজেট প্রকাশের মাধ্যমেই কার্যকর হবে।
রায়ে আরও উল্লেখ করা হয়, ওষুধ নিয়ন্ত্রণ অধ্যাদেশ ১৯৮২ অনুযায়ী সরকার ১৯৯৩ সালে ৭৩৯টি ওষুধের দাম গেজেট আকারে প্রকাশ করেছিল। পরে ১৯৯৪ সালের সিদ্ধান্তে ওই ক্ষমতা সীমিত করে মাত্র ১১৭টি ওষুধ সরকারের নিয়ন্ত্রণে রাখা হয় এবং বাকিগুলোর মূল্য নির্ধারণ উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানের হাতে তুলে দেওয়া হয়। হাইকোর্ট সেই সিদ্ধান্তকেই আইনি কাঠামোর সঙ্গে সাংঘর্ষিক বলে অভিহিত করেন।
