পর্তুগালে অভিবাসন ও নাগরিকত্ব আইন পরিবর্তনের সিদ্ধান্ত, কড়াকড়ি আসছে নতুন নিয়মে

portugal immigration law changes

পর্তুগালের প্রধানমন্ত্রী আন্তোনিও লেইতাঁও আমারোর নেতৃত্বে অনুষ্ঠিত মন্ত্রিসভা বৈঠকে চারটি গুরুত্বপূর্ণ আইনগত পরিবর্তনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এসব পরিবর্তনকে অভিবাসন ব্যবস্থায় “নিয়ন্ত্রণহীন প্রবাহ”-এর বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ হিসেবে দেখা হচ্ছে।

সাবেক এসইএফ (SEF) – এর আদলে একটি নতুন ‘বিদেশি ও সীমান্ত ইউনিট’ গঠিত হবে পিএসপি (PSP) পুলিশের অধীনে।
নতুন আইনের আওতায় পর্তুগালের নাগরিকত্ব পাওয়ার শর্ত আরও কঠোর করা হচ্ছে। এখন থেকে কেউ পর্তুগালের নাগরিক হতে চাইলে তাকে প্রমাণ করতে হবে যে, তিনি দেশটির জাতীয় সমাজের সাথে “গভীর, দীর্ঘস্থায়ী এবং প্রকৃত সম্পর্ক” গড়ে তুলতে আগ্রহী।

শিশুদের নাগরিকত্বে বড় পরিবর্তন

পর্যটক ভিসায় আগত বিদেশি বাবা-মার সন্তানেরা আর পর্তুগালের নাগরিকত্ব পাবেন না। শুধু তখনই নাগরিকত্ব মিলবে, যদি বাবা-মা উভয়েই পর্তুগালে কমপক্ষে তিন বছর ধরে বৈধভাবে বসবাস করেন এবং তারা নিজ উদ্যোগে নাগরিকত্বের আবেদন করেন।

বিদেশিদের পর্তুগালের নাগরিকত্ব পাওয়ার জন্য বসবাসের সময়সীমা বর্তমান ৫ বছর থেকে বাড়িয়ে ১০ বছর করা হচ্ছে (CPLP সদস্য দেশের নাগরিকদের জন্য ৭ বছর)। পাশাপাশি ৫০০ বছর আগের ধর্মীয় নিপীড়নে বিতাড়িত সেফার্দি ইহুদিদের নাগরিকত্বের সুযোগ পুরোপুরি বাতিল করা হয়েছে।

অপরাধ করলে নাগরিকত্ব হারানোর ঝুঁকি

যারা পর্তুগালের নাগরিক হয়েও গুরুতর অপরাধ (যেমন হত্যা, ধর্ষণ বা বড় ধরণের প্রতারণা) করবেন, তাদের নাগরিকত্ব বাতিল করার বিধান রাখা হয়েছে। অপরাধীদের জন্য পর্তুগাল আর নিরাপদ আশ্রয় নয়।

কোনো কাজের চুক্তি ছাড়া কেবলমাত্র উচ্চ দক্ষতাসম্পন্ন বিদেশিদেরই পর্তুগাল সফরের অনুমতি মিলবে। অবৈধ বা কম দক্ষ বিদেশি অভিবাসীদের প্রবেশ নিয়ন্ত্রণে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

অভিবাসীদের পারিবারিক পুনর্মিলন বর্তমানে স্থগিত করা হয়েছে। ভবিষ্যতে কেবলমাত্র তাদের সন্তানদেরই আনার সুযোগ থাকবে, যারা পর্তুগালে বৈধভাবে অন্তত দুই বছর বসবাস করছেন এবং তাদের পর্যাপ্ত বাসস্থান ও অর্থনৈতিক সামর্থ্য রয়েছে। আগত সদস্যদের ভাষা শেখা এবং স্কুলে ভর্তি বাধ্যতামূলক করা হবে।

AIMA-তে (অভ্যন্তরীণ একীকরণ, অভিবাসন ও আশ্রয় সংস্থা) একটি নতুন “ট্যালেন্ট বিভাগ” গঠনের পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে, যারা বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর সঙ্গে সমন্বয়ে বিদেশি গবেষক ও শিক্ষকদের আনার বিষয়ে কাজ করবে।

পর্তুগালের সরকার বলছে, এসব পদক্ষেপ সংবিধান ও মানবিক মূল্যবোধের আলোকে নেওয়া হয়েছে। তবে বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এই পরিবর্তনগুলোর ফলে অভিবাসন ও নাগরিকত্বের ক্ষেত্রে বড় ধরনের প্রভাব পড়বে।