ইউরোপের শীর্ষ নেতারা যখন একত্রিত হন, তখন কূটনৈতিক সৌজন্য ও গুরুত্বপূর্ণ আলোচনাই সাধারণত থাকে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে। আলবেনিয়ার রাজধানী তিরানায় অনুষ্ঠিত ইউরোপিয়ান পলিটিক্যাল কমিউনিটির উদ্বোধনী অনুষ্ঠান কিছুটা ব্যতিক্রম হয়ে উঠেছিল কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা এআই-এর এক ব্যতিক্রমী প্রদর্শনীতে।
৪০টির বেশি দেশের নেতাদের নিয়ে আয়োজিত এই সম্মেলনে, অনুষ্ঠানের শুরুতেই একটি স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্রে সবাইকে দেখানো হয় শিশু রূপে। এআই প্রযুক্তির সাহায্যে তৈরি ভিডিওটিতে প্রতিটি নেতা নিজের ভাষায় বলেন, “Welcome to Albania”। এই ভিন্নধর্মী উপস্থাপনা অনেককে বিস্মিত এবং কেউ কেউকে আনন্দিত করেছে।
ইতালির প্রধানমন্ত্রী জর্জিয়া মেলানিকে ভিডিও চলাকালীন হাসতে দেখা যায়। ডেনমার্কের প্রধানমন্ত্রী মেটে ফ্রেডেরিকসেন অবিশ্বাস্য দৃষ্টিতে পর্দার দিকে তাকিয়ে ছিলেন মুচকি হেসে। তবে তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়্যেপ এরদোয়ান ছিলেন পুরো সময়টাই নির্বিকার, যদিও নিজের অংশটি আসার পর তাঁকে হালকা হাসতে দেখা গেছে। ভিডিওতে তাঁকে ছোট শিশু হিসেবে দেখানো হয়, মুখে তার চেনা গোঁফ।
চলচ্চিত্রের পর বক্তৃতায় ইতালির প্রধানমন্ত্রী মেলানি বলেন, “ভিডিওটি আমাকে আবারও অনেকটা তারুণ্যের অনুভব দিয়েছে।” তিনি ধন্যবাদ জানান আলবেনিয়ার প্রধানমন্ত্রী এডি রামাকে, যিনি ধারণাটি বাস্তবায়ন করেছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।
প্রাক্তন চিত্রশিল্পী ও ফ্রান্সে দীর্ঘদিন বসবাস করা এডি রামা রাজনৈতিক অঙ্গনে একজন খেয়ালি ও সৃজনশীল ব্যক্তি হিসেবে পরিচিত। এ সপ্তাহেই তিনি নির্বাচনে পুনঃনির্বাচিত হন এবং সম্মেলনের শুরুতে ঐতিহ্যবাহী স্নিকার পরে অতিথি নেতাদের স্বাগত জানান। মেলানি পৌঁছালে তিনি হাঁটু গেড়ে তাকে স্বাগত জানান।
তবে শিশুরূপের কল্পনার মধ্য দিয়ে শুরু হওয়া এই সম্মেলনে আলোচনার বিষয় ছিল অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ ও সিরিয়াস। ইউরোপের বেশিরভাগ নেতা ইউক্রেনের প্রতি সমর্থন পুনর্ব্যক্ত করেন এবং রাশিয়ার ওপর আরও নিষেধাজ্ঞা আরোপের পক্ষে মত দেন। কিয়েভ ও মস্কোর মধ্যে ইস্তাম্বুলে শান্তি আলোচনা শুরুর প্রেক্ষাপটে এসব আলোচনা আরও তাৎপর্যপূর্ণ হয়ে ওঠে।